চট্টগ্রামে সমাবেশে বক্তারা

চট্টগ্রামে সমাবেশে বক্তারা : গণমাধ্যমের কণ্ঠ স্তব্ধ করতেই মাহমুদুর রহমানকে হত্যার পরিকল্পনা করছে সরকার
মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, গণমাধ্যমের কণ্ঠ স্তব্ধ করতে এবং ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার লড়াই থেকে বিরত রাখতে না পেরে সরকার নির্ভীক সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার পরিকল্পনা করছে।
তারা সরকারের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, মাহমুদুর রহমানের ওপর জুলুম-নির্যাতন বন্ধ না করলে সরকারকে চরম মূল্য দিতে হবে।
মাহমুদুর রহমান শুধু দেশেই নয়, সারা বিশ্বে এখন সমাদৃত।
বক্তারা মাহমুদুর রহমানের মুক্তি ও আমার দেশ-এর ছাপাখানা খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময়ই মিডিয়ার শত্রু। তারা ভিন্নমত তথা গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না।
শেখ মুজিবুর রহমান চারটি ছাড়া দেশের সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়ে যে বাকশালী ব্যবস্থা কায়েম করেছিলেন, এখন তার উত্তরসূরি শেখ হাসিনা আমার দেশসহ একের পর এক ভিন্নমতের প্রায় সব সংবাদমাধ্যম বন্ধ করে দিয়ে আবারও দেশে বাকশাল কায়েম করেছে। এসব করেও শেখ মুজিবের শেষরক্ষা হয়নি; তার মেয়েরও শেষরক্ষা হবে না। গণরোষের মুখে মিডিয়া দলনকারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটবে।
আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি ও পত্রিকাটির ছাপাখানা খুলে দেয়ার দাবিতে গতকাল সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে মাহমুদুর রহমান মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ এবং আমার দেশ পাঠকমেলা আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এএম নাজিম উদ্দিন, প্রধান বক্তা ছিলেন নগর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রবীণ বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম, অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স (্্এ্যাব) চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার কেএম সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সেলিম মো. জানে আলম, চবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর নসরুল কাদির, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহনেওয়াজ, আমার দেশ চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান জাহিদুল করিম কচি, জাগপা মহানগর সভাপতি আবু মোজাফফর মো. আনাছ, মহিলা দল সভাপতি মনোয়ারা বেগম মণি, লেবার পার্টি নেতা মো. আলাউদ্দিন, তাঁতি দল নেতা সবুক্তগীন সিদ্দিকী মক্কী, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার কেএম বেলায়েত হোসেন, নাজমুল মোস্তফা আমিন, হারুন জামান, আরইউ চৌধুরী শাহিন, মো. শাহ আলম, মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, নবাব খান, আমার দেশ পাঠকমেলার কেন্দ্রীয় পরিচালক ফয়সাল আকবর, মহানগর সাধারণ সম্পাদক হেলাল এম রহমান, ছাত্রদল নেতা মনজুর আলম, কামরুল ইসলাম, এসএম সালাউদ্দিন, সাইফুদ্দিন সালাম মিঠু, বেলায়েত হোসেন বুলু, গাজী সিরাজ, বিএনপি নেতা মো. শাহ আলম, মো. সালাহউদ্দিন, একেএম পেয়ারু, কামরুল হাসান, মনজুর মোর্শেদ রাহাত, জিয়াউল হক সোহেল, আকবর চৌধুরী, এমআই চৌধুরী মামুন, ইব্রাহিম বাচ্চু, ইসমাইল বাবুল, জেসমিন খানম, খালেদা বোরহান, হাজী মো. এমরান, আসিফ আহমেদ প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এএম নাজিম উদ্দিন বলেন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় দৈনিক আমার দেশ শুরু থেকেই অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করে আসছে। কিন্তু বিষয়টি ভালোভাবে নিতে পারেনি গণতন্ত্রের শত্রু ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার। তাই তারা একের পর এক অর্ধশতাধিক মামলা দিয়ে নির্ভীক কলমসৈনিক মাহমুদুর রহমানকে দমানোর চেষ্টা করে। এতেও সত্য ও ন্যায়নিষ্ঠার লড়াই থেকে তাকে বিচ্যুত করতে না পেরে সরকার বেআইনিভাবে দ্বিতীয়বারের মতো মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার এবং আমার দেশ বন্ধ করে দিয়েছে। একটি সাজানো মামলায় নতুন করে রিমান্ডে নিয়ে সরকার তাকে নির্যাতনের মাধ্যমে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করছে।
দেশে আইনের শাসন নেই অভিযোগ করে তিনি বলেন, স্কাইপ সংলাপের মাধ্যমে অপরাধ করেছেন বিচারপতি নিজামুল হক আর শাস্তি দেয়া হচ্ছে মাহমুদুর রহমানকে। কোনো স্বাধীন দেশে এই অরাজকতা চলতে পারে না।
প্রধান বক্তা ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, মাহমুদুর রহমান দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক। ওয়ান-ইলেভেনপরবর্তী সময়ে তার সাহসী লেখনী দেশের গণতান্ত্রিক শক্তিকে জাগ্রত করেছিল। বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধেও কলম লড়াই চালিয়ে যাওয়ায় তিনি সরকারের চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন। তার কণ্ঠ স্তব্ধ করে দিতে রিমান্ডের নামে চালানো হচ্ছে অমানবিক জুলুম-নির্যাতন। ’৭৪ সালের ১৬ জুন শেখ মুজিবুর রহমান ৪টি ছাড়া দেশের সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল। তার উত্তরসূরি ক্ষতায় এসে আমার দেশ, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, চ্যানেল ওয়ানসহ একের পর এক ভিন্নমতের মিডিয়া বন্ধ করে দিয়ে আবারও বাবার বাকশাল কায়েম করেছে। দেশের মানুষ আগেও বাকশালী দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়েছে। এবারও এর অবসান ঘটবে। তিনি বলেন, মাহমুদুর রহমানের ওপর যে নির্যাতন চালানো হচ্ছে, তার পাই পাই হিসাব করে নির্যাতনকারীদের বুঝিয়ে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন দেশের জনগণ মেনে নেবে না। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে।
মানববন্ধন শেষে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল জামাল খান সড়ক ও এসএস খালেদ সড়ক হয়ে কাজীর দেউড়ি মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।