পুরো হাতা জামা ও স্কার্ফ কি শালীনতা পরিপন্থী?
রোকেয়া বেগম : সম্প্রতি দৈনিক ইনকিলাব সহ বিভিন্ন পত্রিকায় উদয়ন স্কুলে ছাত্রীদের ফুলহাতা জামা কেটে দেওয়া সংক্রান্ত খবরটি পড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সামান্য ক্ষতি’ কবিতাটির কথা মনে পড়ে গেল; যা এক সময় খুব মজা করেই পড়তাম।
কাশীর রানী করুণা মাঘের এক সকালে সখিদের নিয়ে নদীতে গোসল করতে গেলেন, কূলে উঠে রানী খুব শীত অনুভব করলেন। সখিদের ত্বরা করে আগুন জ্বালাতে নির্দেশ দিলেন। তারা জ্বালানি সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। সহসা সবারে ডাক দিয়া রানী বললেন, এতো খোঁজাখুঁজি কেন, ওই যে পূর্ণ কুটির দেখছ ওতে আগুন ধরিয়ে দাও না। যে কথা সে কাজ। ক্ষণিকে পুরো মহল্লা পুড়ে ছাই। উপস্থিত বুদ্ধির সাফল্যে চোখে-মুখে পরিতৃপ্তির হাসি নিয়ে রানী-রাজপ্রাসাদে ফিরে এলেন। ওদিকে সর্বহারা প্রজাকুল দলে দলে এসে রাজার কাছে প্রতিবাদ জানাতে থাকলো। ক্রুদ্ধ রাজা রানীকে দরবারে ডাকলেন। অসময়ে ডাক পড়ায় বিরক্তি ভাব নিয়ে রানী এসে রুঢ় কণ্ঠে রাজার কৈফিয়ত চাইলেন। রাজা রানীর কাছে গরিব প্রজাদের ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে দেয়ার কারণ জানতে চাইলেন। শীত নিবারণে দৃষ্টিকটু কিছু পর্ণকুটির জ্বালিয়ে দিয়েছি এতে প্রাণীকুলের এমন কী ক্ষতি হয়েছে? রাজা কী জানে না ‘কত ধন যায় রাজ মহিষীর এক প্রহরের প্রমোদে’। রানীর জবাবে লজ্জিত ও মর্মাহত রাজা মুহূর্তে কর্তব্য ঠিক করে ফেললেন। দাসীকে ডেকে রানীর রতন-ভূষণ খুলে জীর্ণ বস্ত্র পরিয়ে রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘তোমাকে বৎসর কাল সময় দেয়া হলো পুড়ে যাওয়া ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ করে তবে এসে জানিও রানী এক প্রহরের লীলায় তোমার কত ধন যায়।’
উদয়ন স্কুলের ম্যাডাম কল্পনার আচরণে আজ তিন যুগ পরে কাশীর মহিয়ষী করুণার কথা মনে পড়ে গেল। দুটি ঘটনার কী অপূর্ব মিল, যদিও একটি রূপক, অন্যটি বাস্তব। দুই নারীর একজন রাজরানী, আরেকজন রানী না হলেও মন্ত্রীর স্ত্রী তো বটে। রানী করুণার মতো ম্যাডাম কল্পনারও এই অনুভূতি নেই যে, তার কাঁচির ঘায় মেয়েদের জামার হাতাই কেবল কাটেনি, কেটেছে কোটি মানুষের হৃদয়, ঐতিহ্য চেতনা এবং বিশ্বাস। এই অযাচিত কাঁচি চালানোর মাধ্যমে শুধু কী সেই মেয়েদেরই অপমান করা হলো? উদয়ন স্কুলের সহশিক্ষা প্রচলিত এহেন অবস্থায় পোশাক পরিচ্ছদে মেয়েদের একটু বেশি মার্জিত ও সংযত হওয়াই সঙ্গত নয় কী? অথচ সহপাঠী ছেলেদের সামনেই প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের এভাবে অপমান যে শ্লীলতাহানির মতোই আপত্তিকর এই বোধটাও কী তিনি হারিয়ে ফেলেছেন? অপমান ও লজ্জায় অনেকে কেঁদে ফেল্লেও মহিয়ষী করুণার মতোই ম্যাডাম কল্পনার এতটুকু করুণা হয়নি, কারণ তিনি অন্তত উজিরের স্ত্রী তো বটেই!
স্কুলের প্রিন্সিপাল উম্মে সালমা বেগম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘তাদের বারবার সতর্ক করে দেয়ার পরও তারা ফ্যাশন করতে থ্রি-কোয়ার্টার এবং ফুল হাতার পোশাক পরে এসেছে। ... এ কারণে আমি এ ধরনের কাজ করতে অনুমতি দিয়েছি।’ অবশ্য তিনি এও বলেছেন, কোনো ছাত্রীর ধর্মীয় অনুভূতি থাকলে আবেদন করে স্কার্ফ কিংবা ফুল হাতার পোশাক পরতেই পারে। ফ্যাশন করে কোনো মেয়ে প্যান্ট ও টি-শার্ট পরতে পারে বটে কিন্তু ফ্যাশন করে কেউ স্কার্ফ, ফুলহাতা জামা পরে- এমনটি বিরল ব্যতিক্রম বলেই মনে হয় না কী?
স্কার্ফ না পরা বা হাফ হাতার শালীন ও মার্জিত (!) পোশাক পরার জন্য কোনো পূর্বানুমতির প্রয়োজন না থাকলেও স্কার্ফ ও ফুলহাতার মতো অমার্জিত (?) পোশাক পরার জন্য পূর্বানুমতি এতটাই আবশ্যক? প্রশ্ন জাগে, শালীন ও মার্জিত পোশাক মানুষ কেবল ধর্মীয় কারণেই পরে? প্রিন্সিপালের কথায় বোঝা গেল, অনুমতি সাপেক্ষ স্কার্ফ ও ফুলহাতার মতো অমার্জিত পোশাকও পরা যাবে, এমন প্রভিশন থাকার পরও পূর্বানুমতির অজুহাতে মেয়েদের জামা কেটে দেয়ার মাধ্যমে এই সত্যই কী প্রতিষ্ঠা পেল না যে, মেয়েরাই মেয়েদের ইজ্জত ও সম্ভ্রমের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ। জানা গেল না উদয়ন স্কুলের মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের নামাজ-রোজার জন্যও পূর্বানুমতির প্রয়োজন হয় কিনা? বুঝলাম নামাজ-রোজার বেলায় কোনো কোড নেই, পোশাকের বেলায় নির্দিষ্ট কোড আছে। কিন্তু সেই কোডটা দেশের কৃষ্টি-কালচার ও অনুভূতির সাথে মিল রেখে মেয়েদের নিরাপত্তা সহায়ক এবং ইভটিজিং প্রতিরোধে প্রতিষেধক পোশাক নির্বাচনে সমস্যাটা কি? কোনো অভিভাবক কী এমন দাবি করেছেন কখনো যে, ফুলহাতা জামা ও স্কার্ফ স্কুল ড্রেস হিসেবে নির্বাচন করা যাবে না? মাননীয় প্রিন্সিপালকে (যিনি নিজেও একজন মহিলা) জিজ্ঞেস করা কী অন্যায় হবে যে, পরিণত বয়সের মেয়েদের জন্য ওড়না বা স্কার্ফবিহীন হাফহাতা জামা ও ক্রস বেল্ট অপেক্ষা ফুলহাতা জামা ও স্কার্ফ শালীনতা বোধ ও আব্রু হেফাজতের জন্য নিকটতর নয় কী? সহশিক্ষা ব্যবস্থায় তো একেও অপ্রতুল বলেই মনে হয়। নারী নির্যাতন ও ইভটিজিং রোধক পোশাক সংক্রান্ত বিষয় কুরআন পাকের নির্দেশনা এই প্রসঙ্গে খুব একটা অপ্রাসঙ্গিক বিবেচিত হবে না। আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী! তুমি তোমার স্ত্রীদের, কন্যাদের ও বিশ্বাসী নারীদের বলো তারা যেন চাদরের কিছু অংশ নিজের মুখের ওপর টেনে দেয়। এতে তাদের চেনা সহজতর হবে, ফলে কেউ তাদের উত্ত্যক্ত করবে না।’ আহজাব-৫৯। ‘তারা (নারীরা) যেন সাধারণভাবে যা প্রকাশমান তাছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে, তাদের ঘাড় ও বুক যেন মাথার কাপড় দ্বারা ঢাকা থাকে।’ সূরা নূর-৩০। ‘বৃদ্ধা নারীরা যারা বিবাহের আশা রাখে না তাদের জন্য অপরাধ নেই যদি তারা তাদের সৌন্দর্য না দেখিয়ে তাদের বহির্বাস খুলে রাখে, তবে এ থেকে বিরত থাকাই তাদের জন্য উত্তম। আল্লাহ সব শোনেন, সব জানেন।’ নূর-৬০। মেয়েদের পোশাক তথা পর্দা ও হিজাব সম্পর্কে আল কুরআনের এই নির্দেশনাবলীর কোনটি প্রকৃতি বিরুদ্ধ বা কোন শব্দ বা বাক্যটিতে নারীকে গৃহবন্দি রাখার বা তার মানবীয় অধিকার খর্ব করার কথা আছে? বরং এই কয়েকটি বাক্যে সামাজিক অনাচার প্রতিরোধে সহায়ক শালীন পোশাকের সর্বোত্তম মানদ-টিই তুলে ধরা হয়েছে, মানব প্রকৃতির সাথে সঙ্গতি রেখে। আশা করব ‘চিলে কান নিয়েছে’ এই গুজবের শিকার হয়ে চিলের পিছনে ছোটার আগে কানটা তার জায়গায় আছে কিনা তা হাত উঁচিয়ে একবার দেখে নেব? অতএব ছায়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে না নেমে ড্রেস কোড এমনিভাবে সাজিয়ে নেয়া উত্তম নয় কি, যাতে করে স্কার্ফ ও ফুল হাতা জামা পরার জন্য অনুমতি নিতে না হয়?

কাশীর রানী করুণা মাঘের এক সকালে সখিদের নিয়ে নদীতে গোসল করতে গেলেন, কূলে উঠে রানী খুব শীত অনুভব করলেন। সখিদের ত্বরা করে আগুন জ্বালাতে নির্দেশ দিলেন। তারা জ্বালানি সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। সহসা সবারে ডাক দিয়া রানী বললেন, এতো খোঁজাখুঁজি কেন, ওই যে পূর্ণ কুটির দেখছ ওতে আগুন ধরিয়ে দাও না। যে কথা সে কাজ। ক্ষণিকে পুরো মহল্লা পুড়ে ছাই। উপস্থিত বুদ্ধির সাফল্যে চোখে-মুখে পরিতৃপ্তির হাসি নিয়ে রানী-রাজপ্রাসাদে ফিরে এলেন। ওদিকে সর্বহারা প্রজাকুল দলে দলে এসে রাজার কাছে প্রতিবাদ জানাতে থাকলো। ক্রুদ্ধ রাজা রানীকে দরবারে ডাকলেন। অসময়ে ডাক পড়ায় বিরক্তি ভাব নিয়ে রানী এসে রুঢ় কণ্ঠে রাজার কৈফিয়ত চাইলেন। রাজা রানীর কাছে গরিব প্রজাদের ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে দেয়ার কারণ জানতে চাইলেন। শীত নিবারণে দৃষ্টিকটু কিছু পর্ণকুটির জ্বালিয়ে দিয়েছি এতে প্রাণীকুলের এমন কী ক্ষতি হয়েছে? রাজা কী জানে না ‘কত ধন যায় রাজ মহিষীর এক প্রহরের প্রমোদে’। রানীর জবাবে লজ্জিত ও মর্মাহত রাজা মুহূর্তে কর্তব্য ঠিক করে ফেললেন। দাসীকে ডেকে রানীর রতন-ভূষণ খুলে জীর্ণ বস্ত্র পরিয়ে রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘তোমাকে বৎসর কাল সময় দেয়া হলো পুড়ে যাওয়া ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ করে তবে এসে জানিও রানী এক প্রহরের লীলায় তোমার কত ধন যায়।’
উদয়ন স্কুলের ম্যাডাম কল্পনার আচরণে আজ তিন যুগ পরে কাশীর মহিয়ষী করুণার কথা মনে পড়ে গেল। দুটি ঘটনার কী অপূর্ব মিল, যদিও একটি রূপক, অন্যটি বাস্তব। দুই নারীর একজন রাজরানী, আরেকজন রানী না হলেও মন্ত্রীর স্ত্রী তো বটে। রানী করুণার মতো ম্যাডাম কল্পনারও এই অনুভূতি নেই যে, তার কাঁচির ঘায় মেয়েদের জামার হাতাই কেবল কাটেনি, কেটেছে কোটি মানুষের হৃদয়, ঐতিহ্য চেতনা এবং বিশ্বাস। এই অযাচিত কাঁচি চালানোর মাধ্যমে শুধু কী সেই মেয়েদেরই অপমান করা হলো? উদয়ন স্কুলের সহশিক্ষা প্রচলিত এহেন অবস্থায় পোশাক পরিচ্ছদে মেয়েদের একটু বেশি মার্জিত ও সংযত হওয়াই সঙ্গত নয় কী? অথচ সহপাঠী ছেলেদের সামনেই প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের এভাবে অপমান যে শ্লীলতাহানির মতোই আপত্তিকর এই বোধটাও কী তিনি হারিয়ে ফেলেছেন? অপমান ও লজ্জায় অনেকে কেঁদে ফেল্লেও মহিয়ষী করুণার মতোই ম্যাডাম কল্পনার এতটুকু করুণা হয়নি, কারণ তিনি অন্তত উজিরের স্ত্রী তো বটেই!
স্কুলের প্রিন্সিপাল উম্মে সালমা বেগম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘তাদের বারবার সতর্ক করে দেয়ার পরও তারা ফ্যাশন করতে থ্রি-কোয়ার্টার এবং ফুল হাতার পোশাক পরে এসেছে। ... এ কারণে আমি এ ধরনের কাজ করতে অনুমতি দিয়েছি।’ অবশ্য তিনি এও বলেছেন, কোনো ছাত্রীর ধর্মীয় অনুভূতি থাকলে আবেদন করে স্কার্ফ কিংবা ফুল হাতার পোশাক পরতেই পারে। ফ্যাশন করে কোনো মেয়ে প্যান্ট ও টি-শার্ট পরতে পারে বটে কিন্তু ফ্যাশন করে কেউ স্কার্ফ, ফুলহাতা জামা পরে- এমনটি বিরল ব্যতিক্রম বলেই মনে হয় না কী?
স্কার্ফ না পরা বা হাফ হাতার শালীন ও মার্জিত (!) পোশাক পরার জন্য কোনো পূর্বানুমতির প্রয়োজন না থাকলেও স্কার্ফ ও ফুলহাতার মতো অমার্জিত (?) পোশাক পরার জন্য পূর্বানুমতি এতটাই আবশ্যক? প্রশ্ন জাগে, শালীন ও মার্জিত পোশাক মানুষ কেবল ধর্মীয় কারণেই পরে? প্রিন্সিপালের কথায় বোঝা গেল, অনুমতি সাপেক্ষ স্কার্ফ ও ফুলহাতার মতো অমার্জিত পোশাকও পরা যাবে, এমন প্রভিশন থাকার পরও পূর্বানুমতির অজুহাতে মেয়েদের জামা কেটে দেয়ার মাধ্যমে এই সত্যই কী প্রতিষ্ঠা পেল না যে, মেয়েরাই মেয়েদের ইজ্জত ও সম্ভ্রমের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ। জানা গেল না উদয়ন স্কুলের মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের নামাজ-রোজার জন্যও পূর্বানুমতির প্রয়োজন হয় কিনা? বুঝলাম নামাজ-রোজার বেলায় কোনো কোড নেই, পোশাকের বেলায় নির্দিষ্ট কোড আছে। কিন্তু সেই কোডটা দেশের কৃষ্টি-কালচার ও অনুভূতির সাথে মিল রেখে মেয়েদের নিরাপত্তা সহায়ক এবং ইভটিজিং প্রতিরোধে প্রতিষেধক পোশাক নির্বাচনে সমস্যাটা কি? কোনো অভিভাবক কী এমন দাবি করেছেন কখনো যে, ফুলহাতা জামা ও স্কার্ফ স্কুল ড্রেস হিসেবে নির্বাচন করা যাবে না? মাননীয় প্রিন্সিপালকে (যিনি নিজেও একজন মহিলা) জিজ্ঞেস করা কী অন্যায় হবে যে, পরিণত বয়সের মেয়েদের জন্য ওড়না বা স্কার্ফবিহীন হাফহাতা জামা ও ক্রস বেল্ট অপেক্ষা ফুলহাতা জামা ও স্কার্ফ শালীনতা বোধ ও আব্রু হেফাজতের জন্য নিকটতর নয় কী? সহশিক্ষা ব্যবস্থায় তো একেও অপ্রতুল বলেই মনে হয়। নারী নির্যাতন ও ইভটিজিং রোধক পোশাক সংক্রান্ত বিষয় কুরআন পাকের নির্দেশনা এই প্রসঙ্গে খুব একটা অপ্রাসঙ্গিক বিবেচিত হবে না। আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী! তুমি তোমার স্ত্রীদের, কন্যাদের ও বিশ্বাসী নারীদের বলো তারা যেন চাদরের কিছু অংশ নিজের মুখের ওপর টেনে দেয়। এতে তাদের চেনা সহজতর হবে, ফলে কেউ তাদের উত্ত্যক্ত করবে না।’ আহজাব-৫৯। ‘তারা (নারীরা) যেন সাধারণভাবে যা প্রকাশমান তাছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে, তাদের ঘাড় ও বুক যেন মাথার কাপড় দ্বারা ঢাকা থাকে।’ সূরা নূর-৩০। ‘বৃদ্ধা নারীরা যারা বিবাহের আশা রাখে না তাদের জন্য অপরাধ নেই যদি তারা তাদের সৌন্দর্য না দেখিয়ে তাদের বহির্বাস খুলে রাখে, তবে এ থেকে বিরত থাকাই তাদের জন্য উত্তম। আল্লাহ সব শোনেন, সব জানেন।’ নূর-৬০। মেয়েদের পোশাক তথা পর্দা ও হিজাব সম্পর্কে আল কুরআনের এই নির্দেশনাবলীর কোনটি প্রকৃতি বিরুদ্ধ বা কোন শব্দ বা বাক্যটিতে নারীকে গৃহবন্দি রাখার বা তার মানবীয় অধিকার খর্ব করার কথা আছে? বরং এই কয়েকটি বাক্যে সামাজিক অনাচার প্রতিরোধে সহায়ক শালীন পোশাকের সর্বোত্তম মানদ-টিই তুলে ধরা হয়েছে, মানব প্রকৃতির সাথে সঙ্গতি রেখে। আশা করব ‘চিলে কান নিয়েছে’ এই গুজবের শিকার হয়ে চিলের পিছনে ছোটার আগে কানটা তার জায়গায় আছে কিনা তা হাত উঁচিয়ে একবার দেখে নেব? অতএব ছায়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে না নেমে ড্রেস কোড এমনিভাবে সাজিয়ে নেয়া উত্তম নয় কি, যাতে করে স্কার্ফ ও ফুল হাতা জামা পরার জন্য অনুমতি নিতে না হয়?