ধর্মীয় মূল্যবোধ ও পারিবারিক অনুশাসন থেকে দূরে সরে চরম স্বেচ্ছাচারিতা, পর্দাহীনতা ও মদের নেশায় অভ্যস্ত হয়ে নাস্তিক্যবাদে জড়িয়ে পড়ায় সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাহীনতায় মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ছে। মানুষ তুচ্ছ বিষয় নিয়ে হানাহানিতে লিপ্ত হচ্ছে এবং হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ব্যাপক বৃদ্ধি পাচ্ছে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহনশীলতা ও সহমর্মিতা আশঙ্কাজনকভাবে লোপ পাচ্ছে। এসব কিছুর মূলই হচ্ছে ধর্মহীনতা ও নাস্তিক্যবাদ। ইসলামের বিরুদ্ধে নাস্তিকদের অপপ্রচার ও বিভেদ সৃৃষ্টির অপচেষ্টায় লাভ হবে না। নাস্তিক্যবাদের বিরুদ্ধে তৌহিদি জনতা আজ ঐক্যবদ্ধ।
জাতিকে ভীতিকর পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করার জন্যই হেফাজতে ইসলাম ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে আন্দোলন করে যাচ্ছে। হেফাজতে ইসলামের আমির দেশের শীর্ষ আলেম এবং দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে উপরি উক্ত মন্তব্য করেন। বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, ধর্মহীনতা, ভোগ ও মাদকের নেশা, অবাধ চলাফেরা, বেলেল্লাপনা ও পর্দাহীনতায় তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীরা এমন ভয়াবহভাবে জড়িয়ে পড়ছে যে, আজ পরম স্নেহ ও আদরের সন্তানদের কাছে স্বয়ং বাবা-মা-ও নিরাপদ বোধ করছেন না। আজ আদরের সন্তান নিজ বাবা-মাকে বর্বর কায়দায় হত্যা করছে। নৈতিকতার অবক্ষয় কোন পর্যায়ে নেমে গেলে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, তা ভাবাই যায় না। যুব ও তরুণ সমাজের ধর্মীয় ও নৈতিক অবক্ষয় আজ আইয়্যামে জাহেলিয়া তথা বর্বরতার যুগকেও হার মানাচ্ছে। তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলাম দেশ, জাতি ও সমাজকে এমন দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্যই ১৩ দফা বাস্তবায়নের আন্দোলন করছে। অথচ দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে নাস্তিক্যবাদের পক্ষপাতদুষ্ট সরকার দেশ ও জাতির স্বার্থে উত্থাপিত আমাদের দাবিগুলো মেনে না নিয়ে বরং জাতিকে চরম হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা বারবারই বলেছি, হেফাজত কখনো রাজনীতিতে জড়াবে না, গদি ও ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে শামিল হবে না। সরকার দেশ ও জাতির শান্তিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার ব্যাপারে আন্তরিক নয় বলেই উলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে বিষোদগারে নেমেছে। তিনি বলেন, ইসলাম সব সময় শান্তিশৃঙ্খলা ও কল্যাণের আহ্বান জানায়। অন্যায় আগ্রাসন, খুনখারাবি ও জোরজুলুম ইসলাম কখনো সমর্থন করে না। যারা জোরজুলুম, খুনখারাবি ও আগ্রাসী তৎপরতায় বিশ্বাসী, কেবল তারাই ইসলাম ও আলেম-উলামার বিরুদ্ধে বিষোদগারে লিপ্ত হতে পারে। আল্লামা শাহ আহমদ শফী আরো বলেন, তাকওয়া তথা খোদাভীতি ছাড়া পরিপূর্ণ মুমিন হওয়া যায় না। অন্য দিকে আল্লাহর ভয় মানুষের অন্তরে না থাকায় সমাজে অপরাধপ্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অন্তরে আল্লাহভীতি থাকলে কারো পে শরিয়তের হুকুম লঙ্ঘন করা, হারাম পথে চলা কিছুতেই সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আল্লাহভীতির অন্য নাম তাকওয়া, আর এই তাকওয়া থেকে দূরে থাকার কারণেই বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ইহুদি-খ্রিষ্টানরা মুসলমানদের ওপর নানা উপায়ে জুলুম-নির্যাতন চালানোর সাহস পাচ্ছে। দেশে দেশে মুসলমানরা আজ চরমভাবে কুফরি শক্তির হাতে লাঞ্ছিত হচ্ছে। মুসলমানদের এই জুলুম-নির্যাতনের হাত থেকে রা পেতে হলে পূর্ণাঙ্গ তাকওয়া অর্জনের পাশাপাশি ঈমানি শক্তি নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাতিলের মোকাবেলায় সদা সজাগ থাকতে হবে। তিনি সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে মুসলমানদের এক কালিমার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে নাস্তিক্যবাদী শক্তি তৌহিদি জনতা ও উলামা-মাশায়েখের বিরুদ্ধে চরম বিষোদগার ও অপপ্রচারে নেমেছে। তারা বিভেদ তৈরির মাধ্যমে আমাদের ঐক্য বিনষ্ট করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। তিনি বলেন, অপপ্রচার ও বিভেদ তৈরির অপচেষ্টায় লাভ হবে না, নাস্তিক্যবাদের বিরুদ্ধে তৌহিদি জনতা এখন একতাবদ্ধ। তিনি বলেন, মিসর, লিবিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, সিরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের ওপর কুফরি ও নাস্তিক্যবাদী শক্তির শ্যেন দৃষ্টি পড়েছে। অতীত ও বর্তমানের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, বাংলাদেশও এমন আশঙ্কা থেকে মুক্ত নয়। বর্তমানে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আল্লাহ, রাসূল, কুরআন ও ইসলামের ওপর লাঘামহীন আঘাত হানা হচ্ছে। দাড়ি-টুপি, পাঞ্জাবি, হিজাব নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করা হচ্ছে। নিরীহ উলামা-মাশায়েখ ও তৌহিদি জনতার ওপর হামলা, মামলা ও জেল-জুলুম চালানো হচ্ছে। সুতরাং অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে বর্তমানে মুলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই। এ পর্যায়ে আল্লামা শাহ আহমদ শফী অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, দেশের সব ওয়ার্ড, গ্রাম ও পাড়ায় হেফাজতে ইসলামের কমিটি গঠন করতে হবে। নাস্তিক্যবাদ ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত ও জনসচেতনতা তৈরি করতে এসব কমিটি সম্মিলিতভাবে কাজ করবে। পাশাপাশি সমাজে ধর্মীয়, পারিবারিক ও নৈতিক মূল্যবোধের বিস্তার ও অনুশাসন প্রতিষ্ঠায়ও এসব কমিটি কাজ করবে। মদ-নেশা, বেপর্দা, বেহায়াপনা ও যেনা-ব্যভিচারের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, কওমি মাদরাসার ছাত্রভর্তি কার্যক্রম শেষে শীর্ষ উলামা-মাশায়েখ ও নীতিনির্ধারকদের নিয়ে বৈঠকের মাধ্যমে পরবর্তীয় করণীয় ঠিক করা হবে। আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেন, হেফাজতে ইসলাম তাদের ১৩ দফায় নারীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার দিকটাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই চতুর্থ দফা সংযোজন করে উল্লেখ করেছিল যে, দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নারী জাতির সার্বিক উন্নতির বিকল্প নেই। এ ল্েয তাদের নিরাপদ পরিবেশে শিা, স্বাস্থ্য, কর্মস্থল, সম্মানজনক জীবিকা এবং কর্মজীবী নারীদের ন্যায্য পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা করতে হবে। ঘরে-বাইরে ও কর্মস্থলে নারীদের ইজ্জত-আব্রু ও যৌন হয়রানি থেকে বেঁচে থাকার সহায়ক হিসেবে পোশাক ও বেশভূষায় শালীনতা প্রকাশ ও হিজাব পালনে উদ্বুব্ধকরণসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এবং একই লক্ষ্যে নারী-পুরুষের সব ধরনের বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে অবাধ ও অশালীন মেলামেশা, নারী-নির্যাতন, যৌন হয়রানি, নারীর বিরুদ্ধে সব ধরনের সহিংসতা, যৌতুকপ্রথাসহ যাবতীয় নারী নিবর্তনমূলক ব্যবস্থা কঠোর হাতে দমন করতে হবে। হেফাজতের এই চতুর্থ দফা বাস্তবায়ন হলে তরুণ-তরুণীরা ভয়াবহ নৈতিকস্খলনে জড়িত হতে পারত না এবং আজকে মা-বাবারাও সন্তানদের হাতে নিরাপত্তাহীন হওয়ার মতো চরম দুঃসহ পরিস্থিতির মুখে পড়তেন না। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ক্ষমতাসীন মহলসহ ভোগবাদী কথিত সুশীলসমাজ জাতির শান্তিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে হেফাজতের সমালোচনা করছে। এ দিকে হেফাজত আমিরের প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদ বলেন, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হেফাজতের নেতাকর্মীরা দলে দলে হেফাজত আমিরের সাথে সাক্ষাৎ করে দোয়া নিতে আসছেন। তারা যেকোনো পরিস্থিতিতে হেফাজত আমিরের নির্দেশ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে ১৩ দফা বাস্তবায়নের ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছেন। তিনি বলেন, এমন কোনো দিন নেই, যে দিন একাধিক জেলার নেতাকর্মীরা হেফাজত আমিরের সাথে সাক্ষাতে আসছেন না। হেফাজত আমির বর্তমানে গ্রাম ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠন করে তৃণমূল পর্যায়ে হেফাজতের মজবুত ভিত প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করছেন। মাওলানা মুনির আহমদ আরো বলেন, বর্তমানে দেশের সব কওমি মাদরাসায় ছাত্রভর্তি কার্যক্রম চলছে। কওমি মাদরাসায় নতুন শিক্ষাবর্ষের কাস চালু হতে আরো এক-দুই সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। এ বছর দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসায় নতুন ছাত্রভর্তির হার আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি বলে তিনি জানান। হেফাজত আমির আগামী ৩০ আগস্ট দেশব্যাপী দোয়া দিবস সর্বাত্মকভাবে পালন করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন।
জাতিকে ভীতিকর পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করার জন্যই হেফাজতে ইসলাম ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে আন্দোলন করে যাচ্ছে। হেফাজতে ইসলামের আমির দেশের শীর্ষ আলেম এবং দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে উপরি উক্ত মন্তব্য করেন। বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, ধর্মহীনতা, ভোগ ও মাদকের নেশা, অবাধ চলাফেরা, বেলেল্লাপনা ও পর্দাহীনতায় তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীরা এমন ভয়াবহভাবে জড়িয়ে পড়ছে যে, আজ পরম স্নেহ ও আদরের সন্তানদের কাছে স্বয়ং বাবা-মা-ও নিরাপদ বোধ করছেন না। আজ আদরের সন্তান নিজ বাবা-মাকে বর্বর কায়দায় হত্যা করছে। নৈতিকতার অবক্ষয় কোন পর্যায়ে নেমে গেলে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, তা ভাবাই যায় না। যুব ও তরুণ সমাজের ধর্মীয় ও নৈতিক অবক্ষয় আজ আইয়্যামে জাহেলিয়া তথা বর্বরতার যুগকেও হার মানাচ্ছে। তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলাম দেশ, জাতি ও সমাজকে এমন দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্যই ১৩ দফা বাস্তবায়নের আন্দোলন করছে। অথচ দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে নাস্তিক্যবাদের পক্ষপাতদুষ্ট সরকার দেশ ও জাতির স্বার্থে উত্থাপিত আমাদের দাবিগুলো মেনে না নিয়ে বরং জাতিকে চরম হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা বারবারই বলেছি, হেফাজত কখনো রাজনীতিতে জড়াবে না, গদি ও ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে শামিল হবে না। সরকার দেশ ও জাতির শান্তিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার ব্যাপারে আন্তরিক নয় বলেই উলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে বিষোদগারে নেমেছে। তিনি বলেন, ইসলাম সব সময় শান্তিশৃঙ্খলা ও কল্যাণের আহ্বান জানায়। অন্যায় আগ্রাসন, খুনখারাবি ও জোরজুলুম ইসলাম কখনো সমর্থন করে না। যারা জোরজুলুম, খুনখারাবি ও আগ্রাসী তৎপরতায় বিশ্বাসী, কেবল তারাই ইসলাম ও আলেম-উলামার বিরুদ্ধে বিষোদগারে লিপ্ত হতে পারে। আল্লামা শাহ আহমদ শফী আরো বলেন, তাকওয়া তথা খোদাভীতি ছাড়া পরিপূর্ণ মুমিন হওয়া যায় না। অন্য দিকে আল্লাহর ভয় মানুষের অন্তরে না থাকায় সমাজে অপরাধপ্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অন্তরে আল্লাহভীতি থাকলে কারো পে শরিয়তের হুকুম লঙ্ঘন করা, হারাম পথে চলা কিছুতেই সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আল্লাহভীতির অন্য নাম তাকওয়া, আর এই তাকওয়া থেকে দূরে থাকার কারণেই বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ইহুদি-খ্রিষ্টানরা মুসলমানদের ওপর নানা উপায়ে জুলুম-নির্যাতন চালানোর সাহস পাচ্ছে। দেশে দেশে মুসলমানরা আজ চরমভাবে কুফরি শক্তির হাতে লাঞ্ছিত হচ্ছে। মুসলমানদের এই জুলুম-নির্যাতনের হাত থেকে রা পেতে হলে পূর্ণাঙ্গ তাকওয়া অর্জনের পাশাপাশি ঈমানি শক্তি নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাতিলের মোকাবেলায় সদা সজাগ থাকতে হবে। তিনি সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে মুসলমানদের এক কালিমার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে নাস্তিক্যবাদী শক্তি তৌহিদি জনতা ও উলামা-মাশায়েখের বিরুদ্ধে চরম বিষোদগার ও অপপ্রচারে নেমেছে। তারা বিভেদ তৈরির মাধ্যমে আমাদের ঐক্য বিনষ্ট করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। তিনি বলেন, অপপ্রচার ও বিভেদ তৈরির অপচেষ্টায় লাভ হবে না, নাস্তিক্যবাদের বিরুদ্ধে তৌহিদি জনতা এখন একতাবদ্ধ। তিনি বলেন, মিসর, লিবিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, সিরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের ওপর কুফরি ও নাস্তিক্যবাদী শক্তির শ্যেন দৃষ্টি পড়েছে। অতীত ও বর্তমানের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, বাংলাদেশও এমন আশঙ্কা থেকে মুক্ত নয়। বর্তমানে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আল্লাহ, রাসূল, কুরআন ও ইসলামের ওপর লাঘামহীন আঘাত হানা হচ্ছে। দাড়ি-টুপি, পাঞ্জাবি, হিজাব নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করা হচ্ছে। নিরীহ উলামা-মাশায়েখ ও তৌহিদি জনতার ওপর হামলা, মামলা ও জেল-জুলুম চালানো হচ্ছে। সুতরাং অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে বর্তমানে মুলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই। এ পর্যায়ে আল্লামা শাহ আহমদ শফী অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, দেশের সব ওয়ার্ড, গ্রাম ও পাড়ায় হেফাজতে ইসলামের কমিটি গঠন করতে হবে। নাস্তিক্যবাদ ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত ও জনসচেতনতা তৈরি করতে এসব কমিটি সম্মিলিতভাবে কাজ করবে। পাশাপাশি সমাজে ধর্মীয়, পারিবারিক ও নৈতিক মূল্যবোধের বিস্তার ও অনুশাসন প্রতিষ্ঠায়ও এসব কমিটি কাজ করবে। মদ-নেশা, বেপর্দা, বেহায়াপনা ও যেনা-ব্যভিচারের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, কওমি মাদরাসার ছাত্রভর্তি কার্যক্রম শেষে শীর্ষ উলামা-মাশায়েখ ও নীতিনির্ধারকদের নিয়ে বৈঠকের মাধ্যমে পরবর্তীয় করণীয় ঠিক করা হবে। আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেন, হেফাজতে ইসলাম তাদের ১৩ দফায় নারীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার দিকটাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই চতুর্থ দফা সংযোজন করে উল্লেখ করেছিল যে, দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নারী জাতির সার্বিক উন্নতির বিকল্প নেই। এ ল্েয তাদের নিরাপদ পরিবেশে শিা, স্বাস্থ্য, কর্মস্থল, সম্মানজনক জীবিকা এবং কর্মজীবী নারীদের ন্যায্য পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা করতে হবে। ঘরে-বাইরে ও কর্মস্থলে নারীদের ইজ্জত-আব্রু ও যৌন হয়রানি থেকে বেঁচে থাকার সহায়ক হিসেবে পোশাক ও বেশভূষায় শালীনতা প্রকাশ ও হিজাব পালনে উদ্বুব্ধকরণসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এবং একই লক্ষ্যে নারী-পুরুষের সব ধরনের বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে অবাধ ও অশালীন মেলামেশা, নারী-নির্যাতন, যৌন হয়রানি, নারীর বিরুদ্ধে সব ধরনের সহিংসতা, যৌতুকপ্রথাসহ যাবতীয় নারী নিবর্তনমূলক ব্যবস্থা কঠোর হাতে দমন করতে হবে। হেফাজতের এই চতুর্থ দফা বাস্তবায়ন হলে তরুণ-তরুণীরা ভয়াবহ নৈতিকস্খলনে জড়িত হতে পারত না এবং আজকে মা-বাবারাও সন্তানদের হাতে নিরাপত্তাহীন হওয়ার মতো চরম দুঃসহ পরিস্থিতির মুখে পড়তেন না। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ক্ষমতাসীন মহলসহ ভোগবাদী কথিত সুশীলসমাজ জাতির শান্তিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে হেফাজতের সমালোচনা করছে। এ দিকে হেফাজত আমিরের প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদ বলেন, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হেফাজতের নেতাকর্মীরা দলে দলে হেফাজত আমিরের সাথে সাক্ষাৎ করে দোয়া নিতে আসছেন। তারা যেকোনো পরিস্থিতিতে হেফাজত আমিরের নির্দেশ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে ১৩ দফা বাস্তবায়নের ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছেন। তিনি বলেন, এমন কোনো দিন নেই, যে দিন একাধিক জেলার নেতাকর্মীরা হেফাজত আমিরের সাথে সাক্ষাতে আসছেন না। হেফাজত আমির বর্তমানে গ্রাম ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠন করে তৃণমূল পর্যায়ে হেফাজতের মজবুত ভিত প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করছেন। মাওলানা মুনির আহমদ আরো বলেন, বর্তমানে দেশের সব কওমি মাদরাসায় ছাত্রভর্তি কার্যক্রম চলছে। কওমি মাদরাসায় নতুন শিক্ষাবর্ষের কাস চালু হতে আরো এক-দুই সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। এ বছর দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসায় নতুন ছাত্রভর্তির হার আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি বলে তিনি জানান। হেফাজত আমির আগামী ৩০ আগস্ট দেশব্যাপী দোয়া দিবস সর্বাত্মকভাবে পালন করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন।