আজ পরম স্নেহ ও আদরের সন্তানদের কাছে স্বয়ং বাবা-মাও নিরাপদবোধ করছেন না দাবি করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, ধর্মহীনতা, ভোগের, মাদকের নেশা, অবাধ চলাফেরা, বেলাল্লাপনা, পর্দাহীনতায় তরুণ-তরুণী ও কিশোর-কিশোরীরা এমন ভয়াবহ আকারে জড়িয়ে পড়ছে যে, আজ আদরের সন্তান নিজ বাবা-মাকে বর্বর কায়দায় হত্যা করছে।
গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি করেন। এতে দেশশীর্ষ এ আলেম একই সঙ্গে যুব ও তরুণ সমাজের ধর্মীয় ও নৈতিক অবক্ষয় আজ আইয়্যামে জাহিলিয়া তথা বর্বরতার যুগকেও হার মানাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন।
হেফাজতে ইসলাম দেশ, জাতি ও সমাজকে এমন দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্যই ১৩ দফা বাস্তবায়নের আন্দোলন করছে দাবি করে হেফাজতের আমির বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, নাস্তিক্যবাদের পক্ষপাতদুষ্ট সরকার দেশ ও জাতির স্বার্থে উত্থাপিত আমাদের দাবিগুলো মেনে না নিয়ে বরং জাতিকে চরম হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
‘অপপ্রচার ও বিভেদ তৈরির অপচেষ্টায় লাভ হবে না’ বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে ও দেশশীর্ষ আলেম নাস্তিক্যবাদের বিরুদ্ধে তৌহিদি জনতা এখন একতাবদ্ধ বলে দাবি করেন।
একই সঙ্গে তিনি বর্তমানে নাস্তিক্যবাদী শক্তি তৌহিদি জনতা ও উলামা-মাশায়েখের বিরুদ্ধে চরম বিষোদ্গার এবং অপপ্রচারে নেমেছে বলেও দাবি করেন বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে হেফাজতের আমির আরও বলেন, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও পারিবারিক অনুশাসন থেকে দূরে সরে চরম স্বেচ্ছাচারিতা, পর্দাহীনতা ও মদের নেশায় অভ্যস্ত হয়ে নাস্তিক্যবাদে জড়িয়ে পড়ায় সামাজিক বিশৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তাহীনতায় মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন, মানুষ তুচ্ছ বিষয় নিয়ে হানাহানিতে লিপ্ত হচ্ছে এবং হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ব্যাপক হারে বাড়ছে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহনশীলতা ও সহমর্মিতা আশঙ্কাজনকভাবে লোপ পাচ্ছে। এসব কিছুর মূলই হচ্ছে ধর্মহীনতা ও নাস্তিক্যবাদ।
সরকার দেশ ও জাতির শান্তি-শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তার প্রতি আন্তরিক নয় বলেই উলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে বিষোদ্গারে নেমেছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে আল্লামা শফী বলেন, আমরা বারবারই বলেছি, হেফাজত কখনও রাজনীতিতে জড়াবে না, গদি ও ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে শামিল হবে না।
তিনি বলেন, ইসলাম সবসময় শান্তি-শৃঙ্খলা ও কল্যাণের আহ্বান জানায়। অন্যায় আগ্রাসন, খুন-খারাবি ও জোর-জুলুম ইসলাম কখনও সমর্থন করে না। যারা জোর-জুলুম, খুন-খারাবি ও আগ্রাসী তত্পরতায় বিশ্বাসী, কেবল তারাই ইসলাম এবং আলেম-উলামার বিরুদ্ধে বিষোদ্গারে লিপ্ত হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, তাকওয়া তথা খোদাভীতি ছাড়া পরিপূর্ণ মুমিন হওয়া যায় না। অপর দিকে আল্লাহর ভয় মানুষের অন্তরে না থাকার ফলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অন্তরে খোদাভীতি থাকলে কারও পক্ষে শরিয়তের হুকুম লঙ্ঘন করা, হারাম পথে চলা কিছুতেই সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, খোদাভীতির অপর নাম তাকওয়া। আর এই তাকওয়া থেকে দূরে থাকার কারণেই বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ইহুদি-খ্রিস্টানরা মুসলমানদের ওপর নানা উপায়ে জুলুম-নির্যাতন চালানোর সাহস পাচ্ছে। দেশে দেশে মুসলমানরা আজ চরমভাবে কুফরি শক্তির হাতে লাঞ্ছিত হচ্ছেন। মুসলমানদের এই জুলুম-নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে পূর্ণাঙ্গ তাকওয়া অর্জনের পাশাপাশি ঈমানি শক্তি নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাতিলের মোকাবিলায় সদা সজাগ থাকতে হবে। তিনি সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে মুসলমানদের এক কালিমার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
‘বর্তমানে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আল্লাহ, রাসুল, কোরআন ও ইসলামের ওপর লাগামহীন আঘাত হানা হচ্ছে। দাড়ি-টুপি, পাঞ্জাবি, হিজাব নিয়ে ঠাট্টা-মশকারা করা হচ্ছে। নিরীহ উলামা-মাশায়েখ ও তৌহিদি জনতার ওপর হামলা, মামলা ও জেল-জুলুম চালানো হচ্ছে। সুতরাং অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে বর্তমানে মুলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই।’
এমন দাবি করে আল্লামা শফী বলেন, মিসর, লিবিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, সিরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের ওপর কুফরি ও নাস্তিক্যবাদী শক্তির শ্যেনদৃষ্টি পড়েছে। অতীত ও বর্তমানের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, বাংলাদেশও এমন আশঙ্কা থেকে মুক্ত নয়।
এ পর্যায়ে আল্লামা শাহ আহমদ শফী অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, দেশের সব ওয়ার্ড, গ্রাম ও পাড়ায় পাড়ায় হেফাজতে ইসলামের কমিটি গঠন করতে হবে। নাস্তিক্যবাদ ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত ও জনসচেতনতা তৈরি করতে এসব কমিটি সম্মিলিতভাবে কাজ করবে। পাশাপাশি সমাজে ধর্মীয়, পারিবারিক ও নৈতিক মূল্যবোধের বিস্তার ও অনুশাসন প্রতিষ্ঠায়ও এসব কমিটি কাজ করবে দাবি করে হেফাজতের আমির বলেন, মদ-নেশা, বেপর্দা, বেহায়াপনা ও জিনা-ব্যভিচারের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
এতে তিনি কওমি মাদরাসার ছাত্র ভর্তি কার্যক্রম শেষে শীর্ষ উলামা-মাশায়েখ ও নীতি-নির্ধারকদের নিয়ে বৈঠকের মাধ্যমে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে বলে জানান।
আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেন, হেফাজতে ইসলাম তাদের ১৩ দফায় নারীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার দিকটাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই চতুর্থ দফা সংযোজন করে উল্লেখ করেছিল যে, দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নারী জাতির সার্বিক উন্নতির বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে তাদের নিরাপদ পরিবেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মস্থল, সম্মানজনক জীবিকা এবং কর্মজীবী নারীদের ন্যায্য পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা করতে হবে। ঘরে-বাইরে, কর্মস্থলে নারীদের ইজ্জত-আব্রু ও যৌন হয়রানি থেকে বেঁচে থাকার সহায়ক হিসেবে পোশাক ও বেশভূষায় শালীনতা প্রকাশ এবং হিজাব পালনে উদ্বুব্ধকরণসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। একই লক্ষ্যে নারী-পুরুষের সব ধরনের বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে অবাধ ও অশালীন মেলামেশা, নারী-নির্যাতন, যৌন হয়রানি, নারীর বিরুদ্ধে সব ধরনের সহিংসতা, যৌতুক প্রথাসহ যাবতীয় নারী নিবর্তনমূলক ব্যবস্থা কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
হেফাজতের এই চতুর্থ দফা বাস্তবায়ন হলে তরুণ-তরুণীরা ভয়াবহ নৈতিক স্খলনে জড়িত হতে পারত না এবং আজকে মা-বাবারাও সন্তানদের হাতে নিরাপত্তাহীন হওয়ার মতো চরম দুঃসহ পরিস্থিতির মুখে পড়তেন না।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ক্ষমতাসীন মহলসহ ভোগবাদী কথিত সুশীল সমাজ জাতির শান্তি-শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে হেফাজতের সমালোচনা করছে।
এদিকে হেফাজত আমিরের প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদ বলেন, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হেফাজতের নেতাকর্মীরা দলে দলে হেফাজত আমিরের সঙ্গে সাক্ষাত্ করে দোয়া নিতে আসছেন। তারা যে কোনো পরিস্থিতিতে হেফাজত আমিরের নির্দেশ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে বাস্তবায়নের ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছেন।
তিনি বলেন, এমন কোনো দিন নেই, যে দিন একাধিক জেলার নেতাকর্মীরা হেফাজত আমিরের সঙ্গে সাক্ষাতে আসছেন না। হেফাজত আমির বর্তমানে গ্রাম ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠন করে তৃণমূল পর্যায়ে হেফাজতের মজবুত ভিত্তি প্রতিষ্ঠার প্রতি গুরুত্বারোপ করছেন। এ সময় হেফাজত আমির আগামী ৩০ আগস্ট দেশব্যাপী দোয়া দিবস সর্বাত্মকভাবে পালন করার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ দেন।প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদ আরও বলেন, বর্তমানে দেশের সব কওমি মাদরাসায় ছাত্র ভর্তি কার্যক্রম চলছে। কওমি মাদরাসায় নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাস চালু হতে আরও ১-২ সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। এ বছর দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসায় নতুন ছাত্র ভর্তির হার আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি বলে তিনি জানান।
গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি করেন। এতে দেশশীর্ষ এ আলেম একই সঙ্গে যুব ও তরুণ সমাজের ধর্মীয় ও নৈতিক অবক্ষয় আজ আইয়্যামে জাহিলিয়া তথা বর্বরতার যুগকেও হার মানাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন।
হেফাজতে ইসলাম দেশ, জাতি ও সমাজকে এমন দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তির জন্যই ১৩ দফা বাস্তবায়নের আন্দোলন করছে দাবি করে হেফাজতের আমির বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, নাস্তিক্যবাদের পক্ষপাতদুষ্ট সরকার দেশ ও জাতির স্বার্থে উত্থাপিত আমাদের দাবিগুলো মেনে না নিয়ে বরং জাতিকে চরম হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
‘অপপ্রচার ও বিভেদ তৈরির অপচেষ্টায় লাভ হবে না’ বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে ও দেশশীর্ষ আলেম নাস্তিক্যবাদের বিরুদ্ধে তৌহিদি জনতা এখন একতাবদ্ধ বলে দাবি করেন।
একই সঙ্গে তিনি বর্তমানে নাস্তিক্যবাদী শক্তি তৌহিদি জনতা ও উলামা-মাশায়েখের বিরুদ্ধে চরম বিষোদ্গার এবং অপপ্রচারে নেমেছে বলেও দাবি করেন বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে হেফাজতের আমির আরও বলেন, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও পারিবারিক অনুশাসন থেকে দূরে সরে চরম স্বেচ্ছাচারিতা, পর্দাহীনতা ও মদের নেশায় অভ্যস্ত হয়ে নাস্তিক্যবাদে জড়িয়ে পড়ায় সামাজিক বিশৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তাহীনতায় মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ছে।
তিনি বলেন, মানুষ তুচ্ছ বিষয় নিয়ে হানাহানিতে লিপ্ত হচ্ছে এবং হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ব্যাপক হারে বাড়ছে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সহনশীলতা ও সহমর্মিতা আশঙ্কাজনকভাবে লোপ পাচ্ছে। এসব কিছুর মূলই হচ্ছে ধর্মহীনতা ও নাস্তিক্যবাদ।
সরকার দেশ ও জাতির শান্তি-শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তার প্রতি আন্তরিক নয় বলেই উলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে বিষোদ্গারে নেমেছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে আল্লামা শফী বলেন, আমরা বারবারই বলেছি, হেফাজত কখনও রাজনীতিতে জড়াবে না, গদি ও ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে শামিল হবে না।
তিনি বলেন, ইসলাম সবসময় শান্তি-শৃঙ্খলা ও কল্যাণের আহ্বান জানায়। অন্যায় আগ্রাসন, খুন-খারাবি ও জোর-জুলুম ইসলাম কখনও সমর্থন করে না। যারা জোর-জুলুম, খুন-খারাবি ও আগ্রাসী তত্পরতায় বিশ্বাসী, কেবল তারাই ইসলাম এবং আলেম-উলামার বিরুদ্ধে বিষোদ্গারে লিপ্ত হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, তাকওয়া তথা খোদাভীতি ছাড়া পরিপূর্ণ মুমিন হওয়া যায় না। অপর দিকে আল্লাহর ভয় মানুষের অন্তরে না থাকার ফলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অন্তরে খোদাভীতি থাকলে কারও পক্ষে শরিয়তের হুকুম লঙ্ঘন করা, হারাম পথে চলা কিছুতেই সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, খোদাভীতির অপর নাম তাকওয়া। আর এই তাকওয়া থেকে দূরে থাকার কারণেই বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ইহুদি-খ্রিস্টানরা মুসলমানদের ওপর নানা উপায়ে জুলুম-নির্যাতন চালানোর সাহস পাচ্ছে। দেশে দেশে মুসলমানরা আজ চরমভাবে কুফরি শক্তির হাতে লাঞ্ছিত হচ্ছেন। মুসলমানদের এই জুলুম-নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে পূর্ণাঙ্গ তাকওয়া অর্জনের পাশাপাশি ঈমানি শক্তি নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাতিলের মোকাবিলায় সদা সজাগ থাকতে হবে। তিনি সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে মুসলমানদের এক কালিমার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
‘বর্তমানে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আল্লাহ, রাসুল, কোরআন ও ইসলামের ওপর লাগামহীন আঘাত হানা হচ্ছে। দাড়ি-টুপি, পাঞ্জাবি, হিজাব নিয়ে ঠাট্টা-মশকারা করা হচ্ছে। নিরীহ উলামা-মাশায়েখ ও তৌহিদি জনতার ওপর হামলা, মামলা ও জেল-জুলুম চালানো হচ্ছে। সুতরাং অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে বর্তমানে মুলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই।’
এমন দাবি করে আল্লামা শফী বলেন, মিসর, লিবিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, সিরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের ওপর কুফরি ও নাস্তিক্যবাদী শক্তির শ্যেনদৃষ্টি পড়েছে। অতীত ও বর্তমানের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, বাংলাদেশও এমন আশঙ্কা থেকে মুক্ত নয়।
এ পর্যায়ে আল্লামা শাহ আহমদ শফী অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন, দেশের সব ওয়ার্ড, গ্রাম ও পাড়ায় পাড়ায় হেফাজতে ইসলামের কমিটি গঠন করতে হবে। নাস্তিক্যবাদ ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত ও জনসচেতনতা তৈরি করতে এসব কমিটি সম্মিলিতভাবে কাজ করবে। পাশাপাশি সমাজে ধর্মীয়, পারিবারিক ও নৈতিক মূল্যবোধের বিস্তার ও অনুশাসন প্রতিষ্ঠায়ও এসব কমিটি কাজ করবে দাবি করে হেফাজতের আমির বলেন, মদ-নেশা, বেপর্দা, বেহায়াপনা ও জিনা-ব্যভিচারের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
এতে তিনি কওমি মাদরাসার ছাত্র ভর্তি কার্যক্রম শেষে শীর্ষ উলামা-মাশায়েখ ও নীতি-নির্ধারকদের নিয়ে বৈঠকের মাধ্যমে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে বলে জানান।
আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেন, হেফাজতে ইসলাম তাদের ১৩ দফায় নারীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার দিকটাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই চতুর্থ দফা সংযোজন করে উল্লেখ করেছিল যে, দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য নারী জাতির সার্বিক উন্নতির বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে তাদের নিরাপদ পরিবেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মস্থল, সম্মানজনক জীবিকা এবং কর্মজীবী নারীদের ন্যায্য পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা করতে হবে। ঘরে-বাইরে, কর্মস্থলে নারীদের ইজ্জত-আব্রু ও যৌন হয়রানি থেকে বেঁচে থাকার সহায়ক হিসেবে পোশাক ও বেশভূষায় শালীনতা প্রকাশ এবং হিজাব পালনে উদ্বুব্ধকরণসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। একই লক্ষ্যে নারী-পুরুষের সব ধরনের বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে অবাধ ও অশালীন মেলামেশা, নারী-নির্যাতন, যৌন হয়রানি, নারীর বিরুদ্ধে সব ধরনের সহিংসতা, যৌতুক প্রথাসহ যাবতীয় নারী নিবর্তনমূলক ব্যবস্থা কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
হেফাজতের এই চতুর্থ দফা বাস্তবায়ন হলে তরুণ-তরুণীরা ভয়াবহ নৈতিক স্খলনে জড়িত হতে পারত না এবং আজকে মা-বাবারাও সন্তানদের হাতে নিরাপত্তাহীন হওয়ার মতো চরম দুঃসহ পরিস্থিতির মুখে পড়তেন না।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ক্ষমতাসীন মহলসহ ভোগবাদী কথিত সুশীল সমাজ জাতির শান্তি-শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে হেফাজতের সমালোচনা করছে।
এদিকে হেফাজত আমিরের প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদ বলেন, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হেফাজতের নেতাকর্মীরা দলে দলে হেফাজত আমিরের সঙ্গে সাক্ষাত্ করে দোয়া নিতে আসছেন। তারা যে কোনো পরিস্থিতিতে হেফাজত আমিরের নির্দেশ সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে বাস্তবায়নের ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছেন।
তিনি বলেন, এমন কোনো দিন নেই, যে দিন একাধিক জেলার নেতাকর্মীরা হেফাজত আমিরের সঙ্গে সাক্ষাতে আসছেন না। হেফাজত আমির বর্তমানে গ্রাম ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠন করে তৃণমূল পর্যায়ে হেফাজতের মজবুত ভিত্তি প্রতিষ্ঠার প্রতি গুরুত্বারোপ করছেন। এ সময় হেফাজত আমির আগামী ৩০ আগস্ট দেশব্যাপী দোয়া দিবস সর্বাত্মকভাবে পালন করার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ দেন।প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদ আরও বলেন, বর্তমানে দেশের সব কওমি মাদরাসায় ছাত্র ভর্তি কার্যক্রম চলছে। কওমি মাদরাসায় নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাস চালু হতে আরও ১-২ সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। এ বছর দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসায় নতুন ছাত্র ভর্তির হার আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি বলে তিনি জানান।