হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, ইফতার রাসূলের সুন্নাত। এদেশে সেই রাসূল (সা.) এর সুন্নাত পালনে বাধা দেয়া হয়। এ কোন দেশে বাস করি। এ দেশে গান-বাজনার জন্য মাইক ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়; অথচ ইফতারে মাইক ব্যবহার করতে অনুমতি দেয়া হয় না। এতে হেফাজতের কোন ক্ষতি হয় না; সরকারেরই ক্ষতি হয়। ইফতার মাহফিলে মাইক ব্যবহারে বাধা দিয়ে হেফাজতের গণজাগরণ ঠেকানো যাবে না। তিনি বলেন, হেফাজতের আন্দোলন কোন রাজনৈতিক ইস্যু নয়; ঈমাননীতির ইস্যু। ঈমাননীতির ইস্যুতে কোন আপোষ নেই। সকলে বিএনপি-আ’লীগ করেনÑ এতে আমাদের আপত্তি নেই। তবে ঈমাননীতির ইস্যুতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কারণ, দল বড় নয়; ঈমান বড়। তিনি বলেন, এদেশে ১৫০ নারী ধর্ষণকারী শিক্ষকের বিচার হয় না; অথচ মিথ্যা অজুহাতে আল্লামা আহমদ শফির বিচার দাবি করা হয়। তিনি বলেন, নারী নীতিমালা নিয়ে আমাদের দাবি স্পষ্ট। ইসলামেই নারীর অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত। আমরা নারীর হিজাব-পর্দার কথা বলি। হিজাব ফরজ। পর্দা করা মানে নারীর কর্মজীবন নষ্ট কিংবা বন্ধ করা নয়। বরং আরো সুন্দর করা। রিমান্ডে সরকারি ও পুলিশ অফিসারদের বলেছিÑ আপনারা ভুলে আছেন। ফলে দূরত্ব বেড়ে গেছে। কাছাকাছি বসেন; ইসলাম বুঝার চেষ্টা করেন। তবেই সমস্যা অনেক কেটে যাবে। আমাদের ১৩ দফাতে গার্মেন্টস বন্ধ করার কোন দাবি নেই। গার্মেন্টস চলবে, নারীদের কর্মজীবন চলবে, শিক্ষা-দিক্ষা সবই চলবে। তবে কর্মক্ষেত্র আলাদা করতে হবে। যেমন আলাদা বালিকা স্কুল-কলেজ আছে; তেমনি গার্মেন্টস কিংবা নারীদের অন্যান্য কর্মক্ষেত্রে আলাদা ব্যবস্থা করতে হবে। নারী-পুরুষ এক সাথে নয়; আলাদা বসবেÑ মাঝখানে পর্দা থাকতে। এভাবে পর্দা করা হলে ইভটিজিং, নারী নির্যাতন, যৌন হয়রানি বন্ধ হয়ে যাবে। এ সব থেকে নারী সমাজকে রক্ষা করতেই আমাদের আন্দোলন। নারী সমাজের প্রতি বলছিÑ আপনাদের পথভ্রষ্ট এবং ধোকা দেয়ার জন্য ইহুদি-খ্রিস্টান চক্র ষড়যন্ত্রে নেমেছে। দেশের আলেম-ওলামার বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে নারী সমাজকে রাস্তায় নামানোর চেষ্টা হচ্ছে। আল্লামা আহমদ শফি ও আমাদের হেফাজতের বিরুদ্ধে নারী সমাজকে মাঠে নামাচ্ছে। সম্মানিত নারী সমাজের প্রতি আহ্বান জানাইÑ আপনাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে। তাদের মিথ্যা কথা শুনবেন না, বিশ্বাসও করবেন না। আমরা নারীর বিপক্ষে নই; বরং আমরাই নারীর পক্ষে। নারী নির্যাতন, ইভটিজিং, যৌন হয়রানি থেকে নারী জাতিকে রক্ষার্থেই আমরা আন্দোলন করছি। আমরা আপনাদের সহায়তা চাই। আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী গতকাল বৃহম্পতিবার বিকেলে ফটিকছড়ি’র দৌলতপুর কুম্বারপাড়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে হেফাজতে ইসলাম আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। বিশিষ্ট সমাজকর্মী জসিম উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা হেফাজত নেতা মাওলানা আশরাফ বিন ইয়াকুব, দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান ছালামত উল্লাহ চৌধুরী, সাবেক চেয়ারম্যান এসএম সিরাজুদ্দৌল্লাহ। হেফাজত নেতা মুফতি নিজাম উদ্দীনের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন, আবুল হাছান চৌধুরী, মুহাম্মদ ইউনুছ কোম্পানী, হাফেজ আব্দুল করিম, হাফেজ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ মেম্বার প্রমুখ।