মুফতি ওয়াক্কাস ১৫ দিনের রিমান্ডে

পৃথক পাঁচটি মামলায় হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাসের ৩ দিন করে ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
হত্যা, লুটপাট, পুলিশের কাজে বাধা, অগ্নিসংযোগের অভিযোগে দণ্ডবিধি ও বিস্ফোরক আইনে রাজধানীর মতিঝিল ও পল্টন থানায় এ বছর দায়ের হওয়া ৫টি মামলায় ১০ দিন করে ৫০

দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা। গত ৩ সেপ্টেম্বর মতিঝিল থানার দণ্ডবিধিসহ বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের দুটি মামলায় ১০ দিন করে ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন শুনানির জন্য গতকাল সোমবার দিন ধার্য করা হয়েছিল। নতুন করে মতিঝিল থানার 
উপ-পরিদর্শক শাহজাহান হত্যা মামলাসহ পল্টন থানার অপর দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ড চাওয়া হয়।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এসএম আশিকুর রহমান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। শুনানিকালে ওয়াক্কাসকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ড আবেদনের শুনানি করেন ঢাকা মহানগর পিপি আবদুল্লাহ আবু। শুনানিতে তিনি বলেন, গত ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও অর্থের জোগানদাতাদের পরিচয় জানতে এবং পলাতক আসামিদের নাম-ঠিকানা জানার জন্য ওই রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত কর্মকর্তার প্রার্থিত মতে রিমান্ড মঞ্জুর করা হোক। 
অন্যদিকে ওয়াক্কাসের পক্ষে আদালতে রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিনের আবেদন করা হয়। এতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, মহসীন মিয়া প্রমুখ।
শুনানিতে তারা বলেন, নাস্তিকরা ইসলাম ও মহানবীকে (সা.) কটূক্তি করার প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনকালে বিনা উসকানিতে গুলি করে পাখির মতো মানুষ খুন এবং শত শত মানুষকে আহত করা হয়েছে। অথচ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরুদ্ধ করে রাখা ব্লগারদের প্রশাসনের পাহারায় শাহবাগে সমর্থন দেয়া হয়েছে। একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান হিসেবে তিনি ঈমানি দায়িত্ব পালন করেছেন। আমরাও মুসলিম। আমরাও এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। মুফতি ওয়াক্কাস একজন ইসলামী চিন্তাবিদ, সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী। সম্প্রতি হার্ট অ্যাটাকের পর বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় দিনযাপন করছেন তিনি। মতিঝিলে হেফাজতের শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া মিথ্যা মামলায় তাকে জড়ানো হয়েছে। মামলার এজাহারেও তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। বিচার বিভাগকে স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রেখে নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে ন্যায় বিচারের স্বার্থে রিমান্ড বাতিল করে তাকে জামিন দেয়া হোক।
উল্লেখ্য, মুফতি ওয়াক্কাস বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটভুক্ত জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির। তিনি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সরকারের আমলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। এছাড়া ২০০১ সালের নির্বাচনে চারদলীয় জোটের হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। 
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গত ২ সেপ্টেম্বর কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের (বেফাক) একটি মিটিং চলাকালে দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করে।