
বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ সরকার স্টাইলে মিসরের ইসলামপন্থী রাজনৈতিক সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের ওপর গতকাল শেষ রাতে গণহত্যা চালিয়েছে দেশটির সেনাসরকার। কায়রোতে ফজরের নামাজরত ব্রাদারহুড কর্মীদের ওপর সেনাবাহিনীর নির্বিচার গুলিতে অন্তত ৫১ জন নিহত হয়েছে বলে সরকারের পক্ষ থেকেই স্বীকার করা হয়েছে।
এদের সবাইকে পরিকল্পিতভাবে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ব্রাদারহুড একে ‘গণহত্যা’ মন্তব্য করে জানিয়েছে, গুলিতে আরও ৫ শতাধিক লোক আহত হয়েছে। বিবিসি, সিএনএন ও আল জাজিরা জানায়, গতকাল শেষ রাতে কায়রোর কুখ্যাত রিপাবলিকান গার্ডের সদর দফতরের সামনে অবস্থানরত ব্রাদারহুড কর্মীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় সেনা ও পুলিশ সদস্যরা। এ সময় ব্রাদারহুড কর্মীরা ফজর নামাজ পড়ছিলেন।
এই সদর দফতরে মিসরের ক্ষমতাচ্যুত ইসলামপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে আটক রাখা হয়েছে। মুরসির পুনর্বহাল দাবিতে সেখানে লাগাতার অবস্থান নিয়েছে নিরস্ত্র ব্রাদারহুড কর্মীরা। এখানে ৩০ লাখ ব্রাদারহুড কর্মী অবস্থান নিয়েছে বলে জানিয়েছে মিসরের সবচেয়ে বৃহত্ রাজনৈতিক দল ব্রাদারহুড।
বিক্ষোভের অজুহাত দেখিয়ে বুধবার মিসরের ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনী। এরপর তাকে বন্দি এবং কোনো কারণ ছাড়াই ব্রাদারহুডের শত শত নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। কার্যত মিসরের তথাকথিত সেক্যুলার সেনাবাহিনী ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছে।
ব্রাদারহুড জানিয়েছে, গতকাল রাত চারটার দিকে ব্রাদারহুডের কর্মীরা যখন ফজরের নামাজ আদায় করছিলেন, তখন নির্বিচারে গুলি চালায় সেনা ও পুলিশ সদস্যরা।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্রাদারহুড কর্মী মোহাম্মদ হাসান বলেন, ‘আমরা দেখলাম হাজারখানেক আর্মি আমাদের ঘিরে ফেলে এবং গুলি চালাতে থাকে। রাস্তার অন্য পাশ থেকে পুলিশ সদস্যরা টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করতে থাকে। তারা আমাদের মাথা ও বুক লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আমি নিজের চোখে ১০ জনকে শহীদ হতে দেখেছি।’
পরে মর্মস্পর্শী এক সংবাদ সম্মেলনে ব্রাদারহুড কর্মীরা সেনাপ্রধান আবদুল ফাত্তাহ আল সিসিকে ‘ঘাতক ও কসাই’ বলে মন্তব্য করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে মিসরবাসীকে অভ্যুত্থানের ডাক দিয়েছে ব্রাদারহুড।
দলটি বলেছে, সেনাবাহিনী ট্যাঙ্কের মাধ্যমে বিপ্লবকে ছিনিয়ে নিতে চায়। আরও গণহত্যা এড়াতে এবং মিসরকে সিরিয়া হতে না দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ব্রাদারহুড।
বিবিসির কায়রো সংবাদদাতা আহমেদ মাহের বলেছেন, ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে কায়রোবাসী।
লক্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে, মিসরের কট্টরপন্থী ইসলামী সংগঠন এবং মুরসিবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমর্থক সালাফিস্ট নূর পার্টিও গতকালের ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ মন্তব্য করে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
উল্লেখ্য, কায়রোর এই গণহত্যার সঙ্গে সম্প্রতি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালিত গণহত্যার যথেষ্ট সাদৃশ্য রয়েছে। গত ৬ এপ্রিল মতিঝিলের শাপলা চত্বরে মধ্যরাতে ঘুমন্ত ও তাহাজ্জুত নামাজরত হেফাজতে ইসলামীর মুসল্লিদের ওপর গণহত্যা চালায় আওয়ামী লীগ সরকার। এ ঘটনায় নিহত ২০২ জনের নাম জানতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন হেফাজত নেতারা। দেশের শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন অধিকার বলেছে, তারা অনুসন্ধান করে ৬ মে ভোররাতে নিহত ৬০ জনের বেশি লোকের নাম জানতে পেরেছে। তবে এখনও বহু লোক নিখোঁজ রয়েছে জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
অন্যদিকে গত শুক্রবার মুরসি সমর্থক ও মুরসিবিরোধীদের মধ্যে কায়রোতে সংঘর্ষ চলাকালে সেনাবাহিনী শুধু মুরসি সমর্থকদের ওপর গুলি চালায়। এতে অন্তত ৩৪ জন মুরসি সমর্থক নিহত হয়।
ব্রাদারহুড বলেছে, তারা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় যে, গণতন্ত্রের জন্য শান্তিপূর্ণ উপায়ে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে। এ জন্য প্রয়োজনে শহীদ হতেও তারা প্রস্তুত।
২০১১ ও ২০১২ সালে মিসরের ইতিহাসে প্রথম অবাধ সংসদ নির্বাচনে এককভাবে অর্ধেকেরও বেশি আসনে জয়ী হয় ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক শাখা ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি। এরপর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও জয়ী হন ব্রাদারহুডের নেতা মুরসি। কিন্তু মিসরের পতিত স্বৈরশাসক হোসনি মোবারকের নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারপতি ও আমলারা মুরসির কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয়। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মিসরের ইসলামবিরোধী বামপন্থী শক্তি। তারা পদে পদে মুরসিকে বাধা দিয়ে আসছে। দেশ পরিচালনার পরিবর্তে প্রথম বছর মুরসিকে শুধু নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করতে হয়েছে।
মিসরের আমেরিকা পালিত সেনাবাহিনীও চায়নি একটি ইসলামী সরকার মিসর পরিচালনা করুক এবং তাদের কর্তৃত্বকে খর্ব করুক। কার্যত গত ৬০ বছর ধরে সেনাবাহিনীই মিসর শাসন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বছরে ১১ হাজার কোটি টাকা (১৪০ কোটি ডলার) সাহায্য পায় মিসরের সেনাবাহিনী।
এদের সবাইকে পরিকল্পিতভাবে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ব্রাদারহুড একে ‘গণহত্যা’ মন্তব্য করে জানিয়েছে, গুলিতে আরও ৫ শতাধিক লোক আহত হয়েছে। বিবিসি, সিএনএন ও আল জাজিরা জানায়, গতকাল শেষ রাতে কায়রোর কুখ্যাত রিপাবলিকান গার্ডের সদর দফতরের সামনে অবস্থানরত ব্রাদারহুড কর্মীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় সেনা ও পুলিশ সদস্যরা। এ সময় ব্রাদারহুড কর্মীরা ফজর নামাজ পড়ছিলেন।
এই সদর দফতরে মিসরের ক্ষমতাচ্যুত ইসলামপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে আটক রাখা হয়েছে। মুরসির পুনর্বহাল দাবিতে সেখানে লাগাতার অবস্থান নিয়েছে নিরস্ত্র ব্রাদারহুড কর্মীরা। এখানে ৩০ লাখ ব্রাদারহুড কর্মী অবস্থান নিয়েছে বলে জানিয়েছে মিসরের সবচেয়ে বৃহত্ রাজনৈতিক দল ব্রাদারহুড।
বিক্ষোভের অজুহাত দেখিয়ে বুধবার মিসরের ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনী। এরপর তাকে বন্দি এবং কোনো কারণ ছাড়াই ব্রাদারহুডের শত শত নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। কার্যত মিসরের তথাকথিত সেক্যুলার সেনাবাহিনী ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছে।
ব্রাদারহুড জানিয়েছে, গতকাল রাত চারটার দিকে ব্রাদারহুডের কর্মীরা যখন ফজরের নামাজ আদায় করছিলেন, তখন নির্বিচারে গুলি চালায় সেনা ও পুলিশ সদস্যরা।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্রাদারহুড কর্মী মোহাম্মদ হাসান বলেন, ‘আমরা দেখলাম হাজারখানেক আর্মি আমাদের ঘিরে ফেলে এবং গুলি চালাতে থাকে। রাস্তার অন্য পাশ থেকে পুলিশ সদস্যরা টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করতে থাকে। তারা আমাদের মাথা ও বুক লক্ষ্য করে গুলি চালায়। আমি নিজের চোখে ১০ জনকে শহীদ হতে দেখেছি।’
পরে মর্মস্পর্শী এক সংবাদ সম্মেলনে ব্রাদারহুড কর্মীরা সেনাপ্রধান আবদুল ফাত্তাহ আল সিসিকে ‘ঘাতক ও কসাই’ বলে মন্তব্য করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে মিসরবাসীকে অভ্যুত্থানের ডাক দিয়েছে ব্রাদারহুড।
দলটি বলেছে, সেনাবাহিনী ট্যাঙ্কের মাধ্যমে বিপ্লবকে ছিনিয়ে নিতে চায়। আরও গণহত্যা এড়াতে এবং মিসরকে সিরিয়া হতে না দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ব্রাদারহুড।
বিবিসির কায়রো সংবাদদাতা আহমেদ মাহের বলেছেন, ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে কায়রোবাসী।
লক্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে, মিসরের কট্টরপন্থী ইসলামী সংগঠন এবং মুরসিবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমর্থক সালাফিস্ট নূর পার্টিও গতকালের ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ মন্তব্য করে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
উল্লেখ্য, কায়রোর এই গণহত্যার সঙ্গে সম্প্রতি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালিত গণহত্যার যথেষ্ট সাদৃশ্য রয়েছে। গত ৬ এপ্রিল মতিঝিলের শাপলা চত্বরে মধ্যরাতে ঘুমন্ত ও তাহাজ্জুত নামাজরত হেফাজতে ইসলামীর মুসল্লিদের ওপর গণহত্যা চালায় আওয়ামী লীগ সরকার। এ ঘটনায় নিহত ২০২ জনের নাম জানতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন হেফাজত নেতারা। দেশের শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন অধিকার বলেছে, তারা অনুসন্ধান করে ৬ মে ভোররাতে নিহত ৬০ জনের বেশি লোকের নাম জানতে পেরেছে। তবে এখনও বহু লোক নিখোঁজ রয়েছে জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।
অন্যদিকে গত শুক্রবার মুরসি সমর্থক ও মুরসিবিরোধীদের মধ্যে কায়রোতে সংঘর্ষ চলাকালে সেনাবাহিনী শুধু মুরসি সমর্থকদের ওপর গুলি চালায়। এতে অন্তত ৩৪ জন মুরসি সমর্থক নিহত হয়।
ব্রাদারহুড বলেছে, তারা বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় যে, গণতন্ত্রের জন্য শান্তিপূর্ণ উপায়ে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে। এ জন্য প্রয়োজনে শহীদ হতেও তারা প্রস্তুত।
২০১১ ও ২০১২ সালে মিসরের ইতিহাসে প্রথম অবাধ সংসদ নির্বাচনে এককভাবে অর্ধেকেরও বেশি আসনে জয়ী হয় ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক শাখা ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি। এরপর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও জয়ী হন ব্রাদারহুডের নেতা মুরসি। কিন্তু মিসরের পতিত স্বৈরশাসক হোসনি মোবারকের নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারপতি ও আমলারা মুরসির কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয়। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মিসরের ইসলামবিরোধী বামপন্থী শক্তি। তারা পদে পদে মুরসিকে বাধা দিয়ে আসছে। দেশ পরিচালনার পরিবর্তে প্রথম বছর মুরসিকে শুধু নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করতে হয়েছে।
মিসরের আমেরিকা পালিত সেনাবাহিনীও চায়নি একটি ইসলামী সরকার মিসর পরিচালনা করুক এবং তাদের কর্তৃত্বকে খর্ব করুক। কার্যত গত ৬০ বছর ধরে সেনাবাহিনীই মিসর শাসন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বছরে ১১ হাজার কোটি টাকা (১৪০ কোটি ডলার) সাহায্য পায় মিসরের সেনাবাহিনী।