আন্দোলনের নতুন উদ্যোগ

আন্দোলনের নতুন উদ্যোগ : বিরোধী জোটের, রোজার আগেই ঢাকায় বড় সমাবেশ

বাছির জামাল




চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অভাবনীয় সাফল্য লাভ করার পর নতুন করে আন্দোলনের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট। বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া সিঙ্গাপুর থেকে ফেরার পর আন্দোলনের এ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা হতে পারে জানা গেছে। ৪ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেয়ার জন্য খালেদা জিয়ার দেয়া ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ‘কার্যত ব্যর্থ’ হওয়ার পর দলসহ জোটে যে ঝিমানো ভাব এসেছিল, তা সিটি করপোরেশন নির্বাচন-সাফল্যে অনেকটাই কেটে গেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। দল ও জোটের নেতাকর্মীদের এই ‘ফুরফুরে ভাব’ আন্দোলনের কাজে লাগাতে নতুন কর্মসূচি প্রণয়ন করা হচ্ছে বলে বিএনপি চেয়ারপার্সনের ঘনিষ্ঠ কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সূত্রটি জানায়, ঈদের পর নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে নতুন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে বিরোধী জোট। তবে সে পর্যন্ত নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করে রাখতে ছোটখাটো কর্মসূচি দেবে তারা। এরই অংশ হিসেবে আগামী শনিবার সারাদেশে উপজেলা ও থানায় বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ১৮ দল। সোমবার জোটের মহাসচিব পর্যায়ে বৈঠকের পরই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এছাড়াও রোজার আগেই রাজধানীতে বড় ধরনের সমাবেশ করারও পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী
জোটের। এ সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন বিরোধী নেতা খালেদা জিয়া। শাপলা চত্বর কিংবা অন্য কোনো স্থানে এ সমাবেশ হবে। এর আগে বিএনপির পক্ষ থেকে দেশব্যাপী গণসংযোগ কর্মসূচি থাকবে। এছাড়া রমজানেও নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বিএনপি চেয়ারপার্সনসহ জোটের নেতারা।
বিএনপির একটি সূত্রে জানা যায়, সিটি নির্বাচনের আগেই চলমান আন্দোলনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ১৭ জুন থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত সাংগঠনিক কর্মসূচি হাতে নেয় বিএনপি। সে অনুযায়ী এরই মধ্যে সারাদেশের ৭৫টি ইউনিটে সভাপতি বরাবর কেন্দ্র থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যরা প্রতি ইউনিট এবং জেলায় জেলায় সফর করবেন। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের প্রধান করে এসব টিম গঠন করা হয়েছে বলেও সূত্রে জানা গেছে।
গণসংযোগকালে জনগণের কাছে বর্তমান সরকারের আমলের নানা ব্যর্থতা ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি নির্দলীয় সরকারের দাবির প্রতি সবার সমর্থন চাইবেন দলটির নেতারা। বিএনপি নেতারা মনে করছেন, সিটি নির্বাচনে জোট সমর্থিত প্রার্থীর জয়ের পর নির্দলীয় সরকারের দাবি এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটা আন্দোলনের ফসল। তাই এ আন্দোলন চাঙ্গা রাখতে পারলে আগামী দিনে এ দাবি আদায় সহজ হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া জানান, চার সিটির জয়কে আমরা নির্দলীয় সরকারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের ফসল বলে মনে করছি। জনগণ আমাদের দাবির পক্ষে রায় দিয়েছেন। তাই দাবি আদায়ে আস্তে আস্তে কঠোর কর্মসূচির দিকে যেতে হবে। তবে সরকার নিজেদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সিটি নির্বাচনকে উদাহরণ হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করলেও বিএনপি সে ‘ফাঁদে’ পা দেবে না।
জোটের শরিক জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান বলেন, সরকারের কাছ থেকে দাবি আদায়ের জন্য সামনে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। তাই সিটি নির্বাচনের ফলাফলেই এতো উজ্জীবিত হওয়ার কিছু নেই।
ঢাকায় জুন মাসের শেষদিকে সমাবেশ করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ঈদের আগে বিএনপির মতো জোট নেতারা গণসংযোগ করবেন। এক্ষেত্রে স্বাধীনতা দেয়া আছে। আমি নিজেও রংপুর বিভাগে গণসংযোগ করব।