উপমহাদেশে শতাব্দীর ৩ গণহত্যা : জালিয়ানওয়ালাবাগ ঢাকায় ২৫ মার্চ ৭১মতিঝিল গণহত্যা ৬ মে ২০১৩
উপমহাদেশে নিরস্ত্র জনতার ওপর আরও একটি গণহত্যা চালানো হলো। এবারের গণহত্যার স্থান বাংলাদেশে ঢাকায় মতিঝিলের শাপলা চত্বরে। এ নিয়ে এক শতাব্দীরও কম সময়ের মধ্যে উপমহাদেশে তিনটি বড় ধরনের গণহত্যার ঘটনা ঘটল। এর আগে প্রধান দুটো গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল পরাধীন দেশে—ঔপনিবেশিক শাসনে।
এবার গণহত্যা চালানো হয়েছে একটি স্বাধীন দেশে। এর আগের দুটো গণহত্যায় নেতৃত্ব দিয়েছে বিদেশিরা। এবার বাংলাদেশের গণহত্যায় নেতৃত্ব দিয়েছে নিজ দেশের লোকজনই।
শাপলা চত্বরে ৬ মে’র শেষরাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ওপর যারা অনেক ক্ষেত্রে যুদ্ধের সময় ব্যবহৃত মারণাস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে, তারা এদেশেরই সন্তান; সরকারের ‘নিরাপত্তা বাহিনী’। হত্যা করা হয়েছে নির্বিচারে, পৈচাশিক বর্বরতার মাধ্যমে।
জনগণের নিরাপত্তা বিধানের জন্য যে অস্ত্র আমদানি করা হয়েছিল, সেসব অস্ত্র দিয়ে সে জনগণকেই হত্যা করা হয়েছে। হতভাগ্য, নিরীহ, নিরস্ত্র, খেটেখাওয়া সেসব মানুষকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়েছে—যাদের করের টাকায় জীবন চলে কথিত এসব নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের।
উপমহাদেশে ব্রিটিশ আমলে প্রতিবাদী বহু নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করা হলেও সবচেয়ে বড় গণহত্যাটি চালানো হয় উত্তর ভারতের অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগে ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল। হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন ব্রিটিশ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজিনাল্ড ই এইচ ডায়ার। সেদিন ৩৭৯ থেকে ১০০০ জন প্রতিবাদী নিরস্ত্র জনতাকে হত্যা করা হয়েছিল।
এর পর ইতিহাসের আরেকটি বর্বরতম গণহত্যা চালানো হয় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা আজকের বাংলাদেশে। অপারেশন সার্চলাইট নামের ওই অভিযানে সেদিন মধ্যরাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। হত্যা করেছিল কয়েক হাজার ঘুমন্ত মানুষকে।
২৫ মার্চের প্রায় ৪২ বছর পর বাংলাদেশের মানুষ জানতে পেরেছে আরেকটি গণহত্যার খবর—৬ মে মধ্যরাতে মতিঝিলে শাপলা চত্বরের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের কথা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেই রাতে অন্তত তিন হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিকে হত্যা করেছে সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী।
জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড : উত্তর ভারতের অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগে ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন ব্রিটিশ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজিনাল্ড ই এইচ ডায়ার। সেদিন ৩৭৯-১০০০ জনকে হত্যা করা হয়েছিল।
অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন যে, জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের পথ ধরেই ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে।
সেদিন জালিয়ানওয়ালাবাগে জড়ো হয়েছিলেন ১৫০০০ -২০০০০ হিন্দু, মুসলিম ও শিখ।
একজন খ্রিস্টান মিশনারি নারীর ওপর হামলার পর জেনারেল ডায়ার বহু লোককে নির্বিচারে এবং বৈষম্যমূলকভাবে অপমানজনক শাস্তি দিয়েছিলেন। অমৃতসরে সমবেত জনতা জড়ো হয়েছিলেন শান্তিপূর্ণভাবে তার প্রতিবাদ করতে।
এ খবর পেয়ে ৬৫ জন গুর্খা ও ২৫ জন বেলুচি সৈন্য নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন ডায়ার। তিনি সাঁজোয়া যান ও মেশিনগান নিয়ে এসেছিলেন।
ডায়ার সেদিন জনতাকে সরে যেতেও নির্দেশ দেননি। তিনি বরং বের হওয়ার পথ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পরে তিনি বলেছিলেন, জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া তার উদ্দেশ্য ছিল না; তিনি চেয়েছিলেন অবাধ্য ভারতীয়দের শাস্তি দিতে।
গোলাবারুদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ১০ মিনিট ধরে বিরামহীন গুলি চালানো হয়েছিল নিরস্ত্র নারী, পুরুষ ও শিশুদের লক্ষ্য করে। প্রাণ বাঁচাতে তারা মাটিতে শুয়ে পড়েছিলেন। তখন বন্দুকের নল মাটির দিকে তাক করে গুলি করা হয়।
এরপর ব্রিটিশ সরকারের তদন্তে ৩৭৯ জন মৃত্যুর কথা স্বীকার করা হয়। তবে ইন্ডিয়ান কংগ্রেসের হিসাবে নিহতের সংখ্যা ছিল এক হাজার।
২৫ মার্চের কালো রাতে অপারেশন সার্চলাইট : বাঙালিদের স্বাধিকার আন্দোলন স্তব্ধ করে দিতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। জেনারেল টিক্কা খানের নেতৃত্বে পরিচালিত ওই অভিযানে সেদিন ঢাকায় ৫০০০-৭০০০ লোককে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছিল নিউইয়র্ক টাইমস।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজারবাগ পুলিশলাইন ও পিলখানা এলাকার হাজার হাজার মানুষ ওই রাতে পাকিস্তানিদের হাতে নিহত হন। তখন বেশিরভাগ লোকই ছিল গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। ওই ঘুমন্ত এবং নিরস্ত্র জনতাকে খুন করতে বুক কাঁপেনি পাকিস্তানি হায়েনাদের।
জেনারেল টিক্কা খান ছিলেন ওই হত্যাযজ্ঞের মূল পরিকল্পনাকারী। তিনি সে সময় ছিলেন পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার।
পাকিস্তানিরা চেয়েছিল গণহত্যা চালিয়ে বাঙালিদের গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবিতে আন্দোলনকে চিরতরে থামিয়ে দিতে। কিন্তু তা হয়নি। অপারেশন সার্চলাইটের পরই শুরু হয় স্বাধীনতা যুদ্ধ। মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে জনগণ। বস্তুত অপারেশন সার্চলাইটের কারণেই পাকিস্তানের ভাঙন ত্বরান্বিত হয়। স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলনরত বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা লাভ করে।
শাপলা চত্বরের গণহত্যা : ২০১৩ সালে ৬ মে মধ্যরাতে ঢাকার মতিঝিলে শাপলা চত্বরে সমবেত নিরস্ত্র ও নিরীহ তৌহিদি জনতার ওপর হামলা চালায় আওয়ামী সরকার। ইসলামের মর্যাদা রক্ষায় ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবি নিয়ে এসেছিলেন তারা। তাদের প্রায় সবার সঙ্গে ছিল জায়নামাজ, তসবিহ আর পানির বোতল।
কিন্তু তাদের সহ্য করতে পারেনি বাংলাদেশের বর্তমান সেক্যুলার নামধারী ইসলামবিদ্বেষী সরকার। তাদের নিরাপদে সরে যেতে দেয়ার পরিবর্তে সাঁজোয়া যান আর ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ১০ হাজার সদস্য অতর্কিত হামলা চালায়। রাত প্রায় আড়াইটায় তারা ব্রাশফায়ার ও মেশিনগানের গুলিসহ ভয়ঙ্কর মারণাস্ত্র নিয়ে হামলে পড়ে। এতে কয়েক মিনিটের মধ্যেই অন্তত তিন হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান নিহত হয় বলে দাবি করেছে এই সমাবেশের আয়োজক হেফাজতে ইসলামের নেতারা। তারা জানান, এর বাইরে আরও বহু মুসল্লি এখনও নিখোঁজ রয়েছেন এবং হাজার হাজার নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
ইউটিউব ও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় যে খবর বেরিয়েছে, তা হেফাজতের দাবিকেই প্রতিষ্ঠিত করেছে।
সোশ্যাল মিডিয়ার কথা বাদ দিলেও বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম বাংলার চোখ এবং এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন নিহতের যেসব ছবি প্রকাশ করেছে, তাতে ওই কালোরাতে যে বহু লোক নিহত হয়েছিল, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।
কোনো জেনারেল নয়, এবারের হত্যাযজ্ঞ পরিচালিত হয়েছে বিতর্কিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মখা আলমগীরের তত্ত্বাবধানে এবং পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদের পরিচালনায়।
এবার গণহত্যা চালানো হয়েছে একটি স্বাধীন দেশে। এর আগের দুটো গণহত্যায় নেতৃত্ব দিয়েছে বিদেশিরা। এবার বাংলাদেশের গণহত্যায় নেতৃত্ব দিয়েছে নিজ দেশের লোকজনই।
শাপলা চত্বরে ৬ মে’র শেষরাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ওপর যারা অনেক ক্ষেত্রে যুদ্ধের সময় ব্যবহৃত মারণাস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে, তারা এদেশেরই সন্তান; সরকারের ‘নিরাপত্তা বাহিনী’। হত্যা করা হয়েছে নির্বিচারে, পৈচাশিক বর্বরতার মাধ্যমে।
জনগণের নিরাপত্তা বিধানের জন্য যে অস্ত্র আমদানি করা হয়েছিল, সেসব অস্ত্র দিয়ে সে জনগণকেই হত্যা করা হয়েছে। হতভাগ্য, নিরীহ, নিরস্ত্র, খেটেখাওয়া সেসব মানুষকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়েছে—যাদের করের টাকায় জীবন চলে কথিত এসব নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের।
উপমহাদেশে ব্রিটিশ আমলে প্রতিবাদী বহু নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করা হলেও সবচেয়ে বড় গণহত্যাটি চালানো হয় উত্তর ভারতের অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগে ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল। হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন ব্রিটিশ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজিনাল্ড ই এইচ ডায়ার। সেদিন ৩৭৯ থেকে ১০০০ জন প্রতিবাদী নিরস্ত্র জনতাকে হত্যা করা হয়েছিল।
এর পর ইতিহাসের আরেকটি বর্বরতম গণহত্যা চালানো হয় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা আজকের বাংলাদেশে। অপারেশন সার্চলাইট নামের ওই অভিযানে সেদিন মধ্যরাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। হত্যা করেছিল কয়েক হাজার ঘুমন্ত মানুষকে।
২৫ মার্চের প্রায় ৪২ বছর পর বাংলাদেশের মানুষ জানতে পেরেছে আরেকটি গণহত্যার খবর—৬ মে মধ্যরাতে মতিঝিলে শাপলা চত্বরের নারকীয় হত্যাযজ্ঞের কথা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সেই রাতে অন্তত তিন হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিকে হত্যা করেছে সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী।
জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড : উত্তর ভারতের অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগে ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন ব্রিটিশ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজিনাল্ড ই এইচ ডায়ার। সেদিন ৩৭৯-১০০০ জনকে হত্যা করা হয়েছিল।
অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন যে, জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের পথ ধরেই ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে।
সেদিন জালিয়ানওয়ালাবাগে জড়ো হয়েছিলেন ১৫০০০ -২০০০০ হিন্দু, মুসলিম ও শিখ।
একজন খ্রিস্টান মিশনারি নারীর ওপর হামলার পর জেনারেল ডায়ার বহু লোককে নির্বিচারে এবং বৈষম্যমূলকভাবে অপমানজনক শাস্তি দিয়েছিলেন। অমৃতসরে সমবেত জনতা জড়ো হয়েছিলেন শান্তিপূর্ণভাবে তার প্রতিবাদ করতে।
এ খবর পেয়ে ৬৫ জন গুর্খা ও ২৫ জন বেলুচি সৈন্য নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন ডায়ার। তিনি সাঁজোয়া যান ও মেশিনগান নিয়ে এসেছিলেন।
ডায়ার সেদিন জনতাকে সরে যেতেও নির্দেশ দেননি। তিনি বরং বের হওয়ার পথ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পরে তিনি বলেছিলেন, জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া তার উদ্দেশ্য ছিল না; তিনি চেয়েছিলেন অবাধ্য ভারতীয়দের শাস্তি দিতে।
গোলাবারুদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ১০ মিনিট ধরে বিরামহীন গুলি চালানো হয়েছিল নিরস্ত্র নারী, পুরুষ ও শিশুদের লক্ষ্য করে। প্রাণ বাঁচাতে তারা মাটিতে শুয়ে পড়েছিলেন। তখন বন্দুকের নল মাটির দিকে তাক করে গুলি করা হয়।
এরপর ব্রিটিশ সরকারের তদন্তে ৩৭৯ জন মৃত্যুর কথা স্বীকার করা হয়। তবে ইন্ডিয়ান কংগ্রেসের হিসাবে নিহতের সংখ্যা ছিল এক হাজার।
২৫ মার্চের কালো রাতে অপারেশন সার্চলাইট : বাঙালিদের স্বাধিকার আন্দোলন স্তব্ধ করে দিতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। জেনারেল টিক্কা খানের নেতৃত্বে পরিচালিত ওই অভিযানে সেদিন ঢাকায় ৫০০০-৭০০০ লোককে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছিল নিউইয়র্ক টাইমস।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজারবাগ পুলিশলাইন ও পিলখানা এলাকার হাজার হাজার মানুষ ওই রাতে পাকিস্তানিদের হাতে নিহত হন। তখন বেশিরভাগ লোকই ছিল গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। ওই ঘুমন্ত এবং নিরস্ত্র জনতাকে খুন করতে বুক কাঁপেনি পাকিস্তানি হায়েনাদের।
জেনারেল টিক্কা খান ছিলেন ওই হত্যাযজ্ঞের মূল পরিকল্পনাকারী। তিনি সে সময় ছিলেন পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার।
পাকিস্তানিরা চেয়েছিল গণহত্যা চালিয়ে বাঙালিদের গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবিতে আন্দোলনকে চিরতরে থামিয়ে দিতে। কিন্তু তা হয়নি। অপারেশন সার্চলাইটের পরই শুরু হয় স্বাধীনতা যুদ্ধ। মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে জনগণ। বস্তুত অপারেশন সার্চলাইটের কারণেই পাকিস্তানের ভাঙন ত্বরান্বিত হয়। স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলনরত বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা লাভ করে।
শাপলা চত্বরের গণহত্যা : ২০১৩ সালে ৬ মে মধ্যরাতে ঢাকার মতিঝিলে শাপলা চত্বরে সমবেত নিরস্ত্র ও নিরীহ তৌহিদি জনতার ওপর হামলা চালায় আওয়ামী সরকার। ইসলামের মর্যাদা রক্ষায় ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবি নিয়ে এসেছিলেন তারা। তাদের প্রায় সবার সঙ্গে ছিল জায়নামাজ, তসবিহ আর পানির বোতল।
কিন্তু তাদের সহ্য করতে পারেনি বাংলাদেশের বর্তমান সেক্যুলার নামধারী ইসলামবিদ্বেষী সরকার। তাদের নিরাপদে সরে যেতে দেয়ার পরিবর্তে সাঁজোয়া যান আর ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ১০ হাজার সদস্য অতর্কিত হামলা চালায়। রাত প্রায় আড়াইটায় তারা ব্রাশফায়ার ও মেশিনগানের গুলিসহ ভয়ঙ্কর মারণাস্ত্র নিয়ে হামলে পড়ে। এতে কয়েক মিনিটের মধ্যেই অন্তত তিন হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান নিহত হয় বলে দাবি করেছে এই সমাবেশের আয়োজক হেফাজতে ইসলামের নেতারা। তারা জানান, এর বাইরে আরও বহু মুসল্লি এখনও নিখোঁজ রয়েছেন এবং হাজার হাজার নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
ইউটিউব ও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় যে খবর বেরিয়েছে, তা হেফাজতের দাবিকেই প্রতিষ্ঠিত করেছে।
সোশ্যাল মিডিয়ার কথা বাদ দিলেও বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম বাংলার চোখ এবং এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন নিহতের যেসব ছবি প্রকাশ করেছে, তাতে ওই কালোরাতে যে বহু লোক নিহত হয়েছিল, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।
কোনো জেনারেল নয়, এবারের হত্যাযজ্ঞ পরিচালিত হয়েছে বিতর্কিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মখা আলমগীরের তত্ত্বাবধানে এবং পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদের পরিচালনায়।